শনিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মোমের আলোয় চলে হাসপাতাল

মাহবুবুল হক পোলেন, মেহেরপুর

মোমের আলোয় চলে হাসপাতাল

মোমের আলোতে চলে হাসপাতাল। অনেকেই বলেন নামেই জেনারেল হাসপাতাল। নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার, ওষুধ, শয্যা। এমন হাজারো ‘নেই’ নিয়ে চলছে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল। ফলে জেলাবাসী বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা থেকে। সাধারণ মানুষের উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যার এ হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। দীর্ঘদিনেও অবকাঠমোর ন্যূনতম অগ্রগতি হয়নি। বরং দুর্ভোগ বেড়েছে সবার। এ হাসপাতালে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী ভর্তি থাকে। অথচ ১০০ জনের জন্য যেখানে ৪১ জন ডাক্তার প্রয়োজন সেখানে আছেন মাত্র ১১ জন। ফলে রোগীরা সঠিক সময়ে ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় ওষুধ পায় না। হাসপাতালে রোগীর চাপ হলেই বহির্বিভাগের ডাক্তাররা কাজের অজুহাতে রোগী ফেলে অন্যত্র চলে যান। ফলে রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অনেকেই বিনা চিকিৎসায় ফিরে যায়। এ ছাড়া হাসপাতালের পরীক্ষাগারগুলো চলছে মাস্টার রোলের কিছু অনভিজ্ঞ কর্মচারী দিয়ে। ফলে রোগীদের বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হয়। অপারেশন থিয়েটার ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার কথা থাকলেও ডাক্তার ও নার্স সংকটে তা সম্ভব হচ্ছে না। দুপুর ১টা বাজতে না বাজতেই হাসপাতালে বহির্বিভাগের রোগী দেখা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। খাবারের মান নিয়ে রয়েছে অভিযোগ। হাসপাতালের ঠিকাদার প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার ক্ষমতা নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় ইমারজেন্সি অপারেশন সারতে হয় মোমের আলোয়। এত বড় হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের জন্য রয়েছেন মাত্র তিনজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। ফলে হাসপাতালকে জীবাণুমুক্ত রাখতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোগীদের দেখভাল ও হাসপাতালের নিরাপত্তাকাজে ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন। বছরের পর বছর তারা বিনা পারিশ্রমিকে সেবা দিচ্ছেন। সেবা শেষে রোগীদের বকশিশই তাদের আয়ের উৎস। অভিযোগ রয়েছে, এসব স্বেচ্ছাসেবীর ধমকে অস্থির রোগী ও স্বজনরা। তাদের ঠিকমতো খুশি করতে না পারলে রোগীর দুর্ভোগের অন্ত থাকে না। মেহেরপুর শহরের শাহ আলম অভিযোগ করে বলেন, এ হাসপাতালে কোনো সেবা পাওয়া যায় না। আবার সেবা বা অন্য কোনো বিষয়ে কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে জেলার বাইরে রেফার্ড করা হয়।  হাসপাতালের আরএমও ডা. মকলেছুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসক ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্র দেওয়া হয়েছে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর