মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
দুবলায় শুরু শুঁটকি আহরণ

সুন্দরবনে ১৫ হাজার জেলের কর্মব্যস্ততা

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

সুন্দরবনে ১৫ হাজার জেলের কর্মব্যস্ততা

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা  রেঞ্জের দুবলার চরে ৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শুঁটকি আহরণ মৌসুম। শুঁটকি আহরণ মৌসুমের প্রথম দিনে থেকে ট্রলার-নৌকায় জালসহ অস্থায়ী  জেলে পল্লী গড়তে সরঞ্জাম নিয়ে ইতিমধ্যেই ১৫ হাজার জেলে ও মহাজন বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয় থেকে ৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরে বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের পাঁচটি চরে সামুদ্রিক মাছের সর্ববৃহৎ শুঁটকি পল্লীতে জড়ো হয়েছে। ফলে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ১৫ হাজার জেলে। তাদের চোখে-মুখে আনন্দের হাসি। শুরু হয়েছে শুঁটকির জন্য সামুদ্রিক মাছ আহরণ। সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে এসব জেলে-মহাজনরা সরকারি অনুমতি (পাস পারমিট) নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, দুবলারচর, আলোরকোল, নারকেল বাড়ীয়া,  শেলারচর ও মেহেরআলীর চরের সামুদ্রিক মাছ শুঁটকি অস্থায়ী পল্লীতে এবার জেলে-মহাজনদের করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে অনুমিত দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে এই এই অস্থায়ী পল্লী সামুদ্রিক মাছ শুঁটকির কাজ। ১৫  থেকে ২০ হাজার জেলে ও বহরদারা সুন্দরবন বিভাগের কাছ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লীতে অস্থায়ী ঘর করে সামুদ্রিক সাদা মাছসহ চিংড়ি ও কাঁকড়া আহরণ করে।

 সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকি পল্লীর জেলেরা কম-বেশি ৩০ প্রকার জাল ব্যবহার করে মাছ রোদে শুঁকিয়ে বিদেশে রপ্তানির জন্য উপযোগী করে তোলে। সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির কোনো প্রকার ক্ষতি না কারাসহ করোনা বিধির বিষয়টি গুরুত্বেও সঙ্গে দেখা ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও শুঁটকি আহরণ মৌসুমে দুবলায় একটি অস্থায়ী চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে। গত ২০১৮-১৯ শুঁটকি আহরণ মৌসুমে জেলেদের আহরিত ৪১ হাজর ৫৪ কুইনন্টাল শুঁটকি থেকে বন বিভাগ ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ও ২০১৯-২০ মৌসুমে ৪৪ হাজর ৭১৩ কুইনন্টাল শুঁটকি থেকে বন বিভাগ ৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এবার শুঁটকি খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।  মোংলা উপজেলার চাঁদপাই গ্রামের জেলে রহমত আলী (৫০) ও শরণখোলার হেদায়েত হোসেন (৪৮) মুঠোফোনে জানান, হাজার-হাজার জেলে নিয়ে মহাজনরা এবারও সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীতে সামুদ্রিক মাছ আহরণের জন্য আছেন। শুঁটকি পল্লীতে সমস্যা অনেক। সেখানে কোনো হাসপাতাল নেই।  কেউ অসুস্থ হলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় শরণখোলা ও মোংলা নিতে পথেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আসছে শীত মৌসুমের পুরাটাই জেলেদের থাকতে হবে সাগর ও সুন্দরবনের শুঁটকি পল্লীতে। সেখানে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়লে আমাদের পড়তে হবে চরম বিপদে।

সর্বশেষ খবর