বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ইটভাটায় যাচ্ছে পাহাড়ের মাটি

ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ, দুর্ঘটনার শঙ্কায় স্থানীয়রা

বান্দরবান প্রতিনিধি

ইটভাটায় যাচ্ছে পাহাড়ের মাটি

স্কেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়ের মাটি। বান্দরবানের লামা থেকে তোলা ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে যেখানে-সেখানে গড়ে উঠছে ইটভাটা। অভিযোগ আছে, এসব ভাটার মাটির জোগান দিতে কাটা হচ্ছে পাহাড় ও ফসলি জমি। পরিবেশবাদীরা মনে করেন উন্নয়নের জন্য ইটভাটা প্রয়োজন। তবে ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভাটার কারণে পাহাড়ের প্রকৃতির ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

জানা যায়, লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে এবার গড়ে উঠেছে ৩০টি ইটভাটা। সবগুলো ভাটা স্কুল, জনবসতি এলাকা, খালেরপাড় এবং সড়কের পাশে। বর্ষার শুরু থেকে ইটভাটাগুলো এক্সেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে মৌসুমের জন্য মাটি মজুদ করেছে। এখনো চলছে পাহাড় কাটার কার্যক্রম। ফাইতং ইউনিয়নের মে অংপাড়ার বাসিন্দা উসিংমং মারমা ও কাইনতিং মারমা বলেন, শুধু এ বছরই নয়, কয়েক বছর ধরে কাটতে কাটতে পাড়ার পাহাড়টি প্রায় নিঃশেষ হয়ে গেছে। তারা জানান, যেভাবে দিন-রাত মাটি কাটা হচ্ছে, তাতে এ বছর পাহাড়ের অস্তিত্ব¡ থাকবে না। পাহাড়টি স্থানীয়দের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করত। পাহাড় কাটতে বাধা দিলে ভাটা মালিকরা মামলা-হামলার হুমকি দেন। শুধু ফাইতং নয়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, সোনাইছড়ি, কাগজিখোলা ও লামা-আলীকদম উপজেলায় বর্ষা মৌসুম এলেই ইটভাটার জন্য পাহাড় কাটা শুরু হয়। গত বর্ষাও পাহাড় কাটা হয়েছে। এরপর কয়েক মাস বন্ধ ছিল। পরে আবার শুরু হয় পাহাড় কাটা। ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ইট পোড়ানোর মৌসুম এলে ঘুমধুমের কয়েক এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পাহাড় কাটার বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর ও প্রশাসন তৎপর হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। পাহাড় কাটার অভিযোগে গত সপ্তাহে ফাইতং ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। পরিবেশ অধিদফতর ও লামা উপজেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ছয়টি ভাটাকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বান্দরবান পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট এ কে এম ছামিউল আলম কুরসি বলেন, অবৈধভাবে পাহাড় কাটা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এর ৬ খ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়ে ফাইতং এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর