শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নদী দখল করে মাছের ঘের

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নদী দখল করে মাছের ঘের

নওগাঁয় নদী দখল করে অবৈধ মাছের ঘের তৈরি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নওগাঁর মান্দায় অবৈধভাবে আত্রাই নদী দখল করে মাছের ঘের তৈরির মহোৎসব শুরু হয়েছে। নদীতে গাছের কাঁটা, ডালপালা নামিয়ে ও বাঁশের বেড়া দিয়ে এসব ঘের তৈরি করায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি। এসব ঘেরে মাছ জড়ো করার নয়া কৌশল হিসেবে বেঁধে রাখা হচ্ছে মৃত প্রাণী। স্থানীয়দের অভিযোগ মৃত প্রাণীর পচা গন্ধে এলাকার পরিবেশ ক্রমেই দূষিত হয়ে উঠছে। জানা যায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পর অবৈধভাবে নদী দখল করে কিছু অসাধু ব্যক্তি মাছের ঘের তৈরি করে দখল পাকাপোক্ত করেন। এতে নদীর স্বাভাবিক নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে পণ্য পরিবহনে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। নদী দখলমুক্ত রাখতে প্রশাসনের কড়া নজরদারি না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। জেলা মৎস্য দফতরের নাকের ডগায় ঘের তৈরির মহোৎসব চললেও তা বন্ধ করতে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উপজেলার বুড়িদহ, সুজনসখী, বাগাতিপাড়া, জোতবাজার, ত্রিমহনীসহ বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে বেশকিছু ঘের তৈরি করা হয়েছে। এসব ঘেরে মাছ জমিয়ে রাখতে নানামুখী কৌশল অবলম্বন করেছে দখলকারীরা। এ ছাড়া নদীতে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে শিয়াল, কুকুরসহ মৃতসব প্রাণী। এ বছরের প্রথম দিকে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নদী দখলমুক্তসহ তৈরি মৎস্য ঘের উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তাকে। কিন্তু মৎস্য কর্মকর্তার নীরব ভূমিকায় স্থানীয় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এরপরও চলতি মৌসুমে নদীতে ঘের তৈরি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার উজান অংশ বানডুবি থেকে শুরু করে ভাটি অংশ মিঠাপুর পর্যন্ত অন্তত ৩০ কিলোমিটার এলাকায় চলতি মৌসুমেও অবৈধ মৎস্য ঘের তৈরি করা হয়েছে। ঘেরগুলোতে এসবের পাশাপাশি কচুরিপানা দিয়ে মাছের অভয়ারণ্য  তৈরি করা হয়ে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মৎস্যজীবীর অভিযোগ, নদীতে ঘের তৈরির কারণে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ শিকার করতে পারছেন না। ঘেরের আশপাশে বড়শি, হুইল অথবা বিভিন্ন প্রকারের জাল দিয়ে মাছ শিকারে বাধা দেওয়া হয় তাদের। বাধা দিতে গিয়ে অবৈধ দখলদারদের হাতে লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন অনেক মৎস্যজীবী। কিন্তু দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পান না তারা। এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, নদীতে মৎস্য ঘের তৈরি না করতে নোটিস জারি করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, নদীতে কোনো প্রকার মৎস্য ঘের  তৈরি করতে দেওয়া হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর