বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান নিয়ে অনিশ্চয়তা

সরকারি গুদামে চাল দিতে অনীহা মিলারদের

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় বোরো মৌসুমে সরকারের চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি। এবার আমন মৌসুমেও ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। সরকার নির্ধারিত দাম পছন্দ না হওয়ায় আমন মৌসুমে সরকারি গুদামে চাল দিতে অনীহা দেখাচ্ছেন চালকল মালিকরা। এ কারণে তারা এখনো সরকারের সঙ্গে চুক্তিই করেননি। মিলারদের অসহযোগিতায় বোরো মৌসুমে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার অনেকটা বাকি রেখে শেষ হয় সংগ্রহ অভিযান। এ জন্য ২৬১ জন চালকল মালিককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে স্থানীয় খাদ্য বিভাগ। জেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে কুষ্টিয়া থেকে ৩৭ টাকা কেজি দরে ২৬ হাজার ৩১৫ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ৪ হাজার ৬৯ মেট্রিক টন। নিয়মানুযায়ী সংগ্রহ অভিযান শুরুর আগে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন চালকল মালিকরা। এবার আমন মৌসুমে চাল সরবরাহের ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার তারিখ ধার্য করা হয়েছে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত। আর মাত্র ৯ দিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত একজন মিলারও চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি। আদৌ তারা চুক্তি করবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। এর আগে বোরো মৌসুমে ৫৩৭ জন কলমালিক সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহের চুক্তি করেন। পরে তাদের মধ্যে ২৬১ জন চাল সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানান।

 কয়েকজন মিল মালিক জানান, বোরো মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি চালের দর ঠিক করে ৩৬ টাকা। তখন ধানের দাম ছিল প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা। ১ হাজার ৪০ টাকা মণে ধান কিনে প্রতি কেজি চাল তৈরি করতে খরচ হয় ৩৯ টাকা। তারপরও মিল মালিকরা লোকসানে চাল সরবরাহ করেছেন। এবার আমন মৌসুমে মাত্র এক টাকা বাড়িয়ে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। তাদের দাবি, বাজারে নতুন ভেজা ধানই বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকা মণ। সেই ধান কিনে মিল পর্যন্ত আনতে খরচ আছে। ৩৭ টাকা দরে চাল সরবরাহ করলে আবারও তাদের লোকসানে পড়তে হবে। এ অবস্থায় হয় ধানের দাম কমাতে হবে না হয় চালের দাম বাড়াতে হবে। কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন প্রধান বলেন, ‘তার সংগঠনের বেশিরভাগ মিল মালিকই চুক্তি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। পরপর দুই মৌসুমে তো লোকসান দেওয়া কঠিন। তাই মিলাররা চুক্তিবদ্ধ হতে ভয় পাচ্ছেন। চুক্তি করে শেষ পর্যন্ত চাল দিতে না পারলে কালো তালিকভুক্ত হওয়ার ভয় যেমন আছে পাশাপাশি জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিল মালিকদের মধ্যে চাল দেওয়ার জন্য কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সংগ্রহ অভিযান কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

সর্বশেষ খবর