বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চাল সরবরাহে ব্যর্থ মিলার

নজরুল মৃধা, রংপুর

সরকারের খাদ্য বিভাগকে ধান-চাল সরবরাহে ব্যর্থ মিল মালিকদের (মিলার) বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অথচ দুই সপ্তাহ আগে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে বোরো মৌসুমে চুক্তিবদ্ধ যেসব মিলার চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ধান-চাল সরবরাহ করেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে ব্যবস্থা নিতে। রংপুর আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক বলছেন, জেলা থেকে তালিকা না আসায় চুক্তিভঙ্গ মিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এদিকে কালো তালিকা থেকে রক্ষা পেতে কয়েকজন মিলার বিভিন্নভাবে তদবির করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২৬ এপ্রিল থেকে সারা দেশে বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরুর কথা ছিল। কিন্তু কৃষকের তালিকা প্রস্তুতে দেরি হওয়ায় রংপুরে নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন পর এ কার্যক্রম শুরু হয়। ৩৬ টাকা দরে সিদ্ধ ও ৩৫ টাকায় আতপ চাল, ২৬ টাকা দরে ধান ও ২৮ টাকা দরে গম সংগ্রহ করা হয়। সূত্র মতে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ২ লাখ ৩২ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন চাল এবং ১ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত ছিল। এর বিপরীতে রংপুর বিভাগে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মিলার সরকারি গুদামে ধান চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু বাজারে প্রতি মণ ধান ৮০০ থেকে ৯২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। একইভাবে মোটা চালের খুচরো বাজারমূল্য এলাকা ভেদে ৩৯ থেকে ৪১ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। অথচ চালের সরকারি সংগ্রহমূল্য প্রতি কেজি ৩৬ টাকা। এ হিসাবে দেখা যায়, প্রতি মণ ধান-চালের সরকারি সংগ্রহমূল্য প্রতি কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা কম থাকায় তালিকাভুক্ত অনেক মিলারই  সরকারি গোডাউনে ধান-চাল সরবরাহ করেনি। আবার কেউ কেউ সরবরাহ করলেও সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শতভাগ ধান-চাল সরবরাহ করেনি। তাই খাদ্য মন্ত্রণালয় দুই সপ্তাহ আগে নির্দেশনা দিয়েছে, যেসব মিলার শর্ত অনুযায়ী ধান-চাল সরবরাহ করতে পারেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করতে। অভিযোগ উঠেছে, কালো তালিকা থেকে রক্ষা পেতে চুক্তিভঙ্গকারী মিলাররা বিভিন্নভাবে তদবির করছে। ফলে রংপুর অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ মিলারদের তালিকা করা সম্ভব হয়নি। বাজারমূল্যের চেয়ে সরকারি সংগ্রহমূল্য কম থাকায় সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি বলে খাদ্য বিভাগ মনে করছে। 

রংপুর আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক আবদুছ ছালাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জেলা পর্যায় থেকে তালিকা আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়নি। তিনি বলেন, খুব দ্রুত শর্তভঙ্গকারী মিলারদের তালিকা করে তা প্রকাশ করা হবে। তিনি আরও জানান, রংপুর অঞ্চলে সংগ্রহ অভিযান ৭০ শতাংশ সফল হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর