শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

আদিতমারীতে ইউএনও চেয়ারম্যান দ্বন্দ্ব

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিনের মধ্যকার দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছে। ফলত উপজেলা চত্বর পাহারায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও ইউএনও দুজনই দুজনকে ‘খারাপ লোক’ বলছেন। সর্বশেষ খবর অভিযোগ তদন্ত করতে আসছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওহাব ভূঞা। বিভাগীয় কমিশনারের দফতর উভয় পক্ষকে চিঠি দিয়ে জানায়, ২৪ নভেম্বর তদন্ত করা হবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইউএনওসহ ১৮ জন অফিসার উপজেলা চেয়ারম্যান কায়েসের বিরুদ্ধে অসদাচরণ,  গালমন্দ ও হত্যার হুমকি দেওয়ার লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিধিবিধান ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে কাজের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে তিনি সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেন। উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কর্মকা-, ভিজিডি, মাতৃত্ব ভাতা, কৃষি প্রণোদনা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধাভোগীর তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন চেয়ারম্যান। বিধিবহির্ভূতভাবে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ না দেওয়ায় এবং প্রাক্কলন কাজ শেষ না হতেই বিল পরিশোধ না করায় সম্প্রতি তিনি উপজেলা প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীকে রুমে বেঁধে পেটানোর হুমকি দেন।

তার কথামতো কাজ না করায় একজন নারী কর্মকর্তাকে বহিরাগতদের দিয়ে মানহানির ঘটনা ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সব দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা তুলে ধরা হয় অভিযোগে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বৃহস্পতিবার মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্ব ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। বিধিসম্মত না হওয়ায় ওই দাবি ইউএনও নাকচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান চেয়ারম্যান। এরপর চেয়ারম্যান ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা লোক দিয়ে খুলতে গেলে তার ছবি তোলেন ইউএনও মনসুর উদ্দিন। একইসঙ্গে ক্যামেরা খুলে ফেলার কারণ জানতে চাইলে ইউএনওকে বলেন, ‘বেশি কথা বললে পিটিয়ে নরসিংদী পাঠিয়ে দেব। উপজেলা পরিষদ কি তোর বাবার সম্পত্তি, উপজেলা পরিষদ কি তুই চালাবি?’

নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে রবিবার (১৫ নভেম্বর) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় জিডি (নম্বর ৫৫৮) করেন ইউএনও। একই দিন যৌথ স্বাক্ষরিত উপজেলার রাজস্ব তহবিলের ব্যাংক হিসাবের ১৯টি চেকের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় থানায় জিডি (নম্বর ৫৫৯) করেন উপজেলা পরিষদ কর্মচারী হাবিবুর রহমান। তবে এক সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান কায়েস বলেন, ইউএনওসহ অফিসারদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তার বিরুদ্ধে তারা কুৎসাচার করছেন। এদিকে ৯ দফা অভিযোগ তুলে উপজেলা চেয়ারম্যান কায়েসের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে চিঠি দিয়েছেন আটজন ইউপি চেয়ারম্যান।

সর্বশেষ খবর