সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ায় ২০ কিশোর গ্যাং

দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহর বাড়ছে অপরাধ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

১৬ বছরের কিশোর তারিকুল ইসলাম। কুষ্টিয়া শহরে একটি প্রসাধনী দোকানে বিক্রয়কর্মীর কাজ করতেন। গত ৩ জুলাই বাড়ির পাশে ফুটবল খেলা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয় তার। একপর্যায়ে কয়েকজন কিশোর উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে তারিকুলকে। শুধু এ হত্যাকান্ডই নয়, শহরের একের পর এক হামলাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। জড়িয়ে পড়ছে মাদক সেবন ও ব্যবসায়। কয়েক মাস ধরে জেলায় কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য যে বেড়েছে-তা পুলিশ কর্মকর্তারাও স্বীকার করছেন। তারিকুল হত্যার ঘটনায় পরিবার ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে একজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে। গত ১২ নভেম্বর কুষ্টিয়া আদালত চত্বরে প্রতিপক্ষের কিশোর গ্যাং সদস্যরা দিনদুপুরে হৃদয় হোসেন নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে। এর বাইরের কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে আরও কয়েকটি মারামারির ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে এসেছে। জানা যায়, কিশোর গ্যাং সদস্যদের পেছনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ছাত্রলীগের বিতর্কিত কয়েকজন নেতা। ওই নেতাদের মধ্যে কয়েকজন দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি জেলও খেটেছেন। অভিযোগ আছে, নিজের স্বার্থ হাসিল করতে কিশোরদের নানাভাবে দলে টানছেন তারা। অনুসন্ধানে শহরের কিশোর গ্যাংয়ের নানা চিত্র উঠে এসেছে। জেলায় প্রায় ২০টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ রয়েছে। যার অর্ধেকের বেশি শহরের কয়েকটি ওয়ার্ড ঘিরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শহরে ১১টির মতো কিশোর গ্যাং রয়েছে। যাদের বয়স ১২-১৭ বছর। পুলিশের তথ্যমতে বেড বয়েজ, ০০৭, বিএসবি গ্রুপসহ বড় চারটি গ্রুপ রয়েছে। যাদের সদস্য সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। কয়েক বছর আগে উপজেলা রোডে ঠুনকো কারণে দুজনকে হত্যা করা হয়। এর আগে কয়েক কিশোর হত্যা করে তাদের এক বন্ধুকে। তখন কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন, বেশকিছু ঘটনায় কিশোর অপরাধীদের আটক ও গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। কেবল আইন প্রয়োগে কাজ হবে না। কিশোর অপরাধীদের রাজনৈতিক মদদ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি তাদের পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর