বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
চরভদ্রাসন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ত্রিমুখী সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ত্রিমুখী সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ত্রিমুখী সংকটে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা। এসব সংকটের মধ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকা, কর্মচারী সংকট এবং প্যাথলজিক্যাল বিভাগে আধুনিক সরঞ্জামের অভাব। ফলে বিভিন্ন সমস্যায় নিমজ্জিত চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এসব কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এলাকাবাসীর কাক্সিক্ষত চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। ১৯৭৭ সালে সদর ইউনিয়নে ৬ একর ৯৫ শতাংশ জমির উপর ৫ টি আবাসিক ভবন  ও  প্রশাসনিক ভবনসহ ৩১ শয্যাবিশিষ্ট একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হিসেবে যাত্রা শুরু করে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৭ সালের ২ জুলাই ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পর কেটে গেছে ৪০ মাস। কিন্তু শয্যা সংখ্যা বাড়ার বিপরিতে জনবল বাড়েনি। ফলে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে এর স্বাস্থ্যসেবা। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একজন ও দুজন ইউনিয়ন সাব সেন্টারের চিকিৎসকসহ কর্মরত আছেন ৭ জন। এর মধ্যে একজন হারবাল চিকিৎসক প্রেষণে টাঙ্গাইল জেলার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করছেন। এছাড়া  মেডিসিন, শিশু, গাইনি, সার্জারি ও এনেস্থসিয়া বিশেষজ্ঞ পদগুলো শূন্য। গত ৪৬ মাস যাবত প্যাথলজি টেকনোলজিস্ট না থাকায় রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি সুবিধা থেকে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারে যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়। তবে জনবল সংকটে চালু করা যায়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি চিকিৎসা নিতে আসা সোমাইয়া জানান, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি চিকিৎসক না থাকায় বাইরের চিকিৎসকরাই ভরসা।

হঠাৎ কোনো প্রকার সমস্যা হলে অসুস্থ শরীর নিয়ে জেলা সদরে  গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। লোহারটেক গ্রাম হতে গাইনি চিকিৎসা নিতে আসা মারিয়া বেগম (২১) বলেন, অসুস্থ শরীর নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলাম। একজন ডাক্তার ছিল শুনলাম বদলি হয়ে গেছে। এখন ফরিদপুরে গিয়ে ডাক্তার দেখানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, তবে পর্যাপ্ত সেবিকা ও চারজন মিডওয়াইফ থাকায় নরমাল ডেলেভারির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত জুলাই ২০১৯ হতে অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত ১৯৬ জন নারী ভর্তি হয়। এর মধ্যে ১৭২টি নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। ১৪ জন রোগী জেলা শহরে স্থানান্তর করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলমান সংকটের কথা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন সংকটের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে বহির্বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ বিভাগে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে  বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর