বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সবজিতে ভরে উঠেছে রাজশাহীর চরাঞ্চল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

সবজিতে ভরে উঠেছে রাজশাহীর চরাঞ্চল

শীতকালীন নানা সবজিতে ভরে উঠেছে রাজশাহীর চরাঞ্চল। জেলার চার উপজেলায় চরের বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষিরা ফলিয়েছেন সোনার ফসল। চরাঞ্চলে সবজির প্রাচুর্য দেখে যে কারও চোখ জুড়াবে। চোখ জুড়াচ্ছে চাষিদেরও। তবে দামে মন ভরছে না তাদের। শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে চাষিদের লাভ হচ্ছে কম। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার চর রয়েছে। চার উপজেলায় চরে জমির পরিমাণ ১৪ হাজার ৪৪ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদি জমির পরিমাণ ৭ হাজার ৯৪৮ হেক্টর। বর্তমানে ৬৬৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। মঙ্গলবার পবা উপজেলার চর মাজারদিয়ায় সরেজমিন দেখা যায়, টমেটো, বাঁধাকপি, বেগুন, শিম, লাউ, পেঁপেসহ নানা তরতাজা সবজিতে ভরে আছে মাঠ। এই চরে পেয়ারা এবং ড্রাগন ফলেরও বাগান হয়েছে। পিঁয়াজ, রসুন, মাসকলাইসহ আরও নানা ফসল চাষ করেছেন চাষিরা। কৃষকরা জানান, বেলে দোআঁশ মাটিতে সার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। পোকামাকড়েরও আক্রমণ কম। শুধু পানি পেলেই চরে সব ফসলের আবাদ ভালো হয়। কিন্তু শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে তারা সবজির দাম পান কম। চর মাজারদিয়া গ্রামের চাষি ফারুক হোসেন বলেন, নদী বড় থাকলে নৌকায় তাদের যোগাযোগ সহজ হয়। কিন্তু তখন পানি ঢুকে তাদের চাষের জমি কমে যায়। আবার পানি নেমে গেলে যে পলি পড়ে তাতে সবজির চাষ ভালো হয়। কিন্তু তখন নৌপথ কমে গিয়ে বেড়ে যায় পায়ে হাঁটার পথ। এই দুর্গম চর থেকে তাদের সবজি ওপারের বাজারে নিতে নিতেই আর তাজা থাকে না। আবার অনেক ব্যবসায়ী চরে সবজি কিনতে আসেন। কিন্তু বিশাল চর আর নদী পাড়ি দিয়ে সবজি নিয়ে যেতে হবে বলে তাদের কম দাম দেওয়া হয়। টমেটো চাষি সোহরাব আলী বলেন, নদীর ওপারে যদি টমেটোর কেজি ২০ টাকা হয়, তাহলে এপারে ১০ টাকা। একটা নদীর এপার-ওপারে দামের এমন পার্থক্য। সোহরাব বলেন, গ্রীষ্ণকালে পানি কমে নদী ছোট হয়ে আসে।

তখন সবজি গরু-মহিষের গাড়ি অথবা ট্রলিতে করে নিয়ে চর পাড়ি দিতে হয়। ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। এসব ভোগান্তির কারণেই ভালো সবজি উৎপাদন করলেও ভালো দাম পান না। পবার হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল বলেন, চরাঞ্চলের সবজির স্বাদ ভালো হওয়ার কারণ এখন সার-কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ভালো সবজি উৎপাদন করেও চাষিরা ভালো মূল্য পান না। তিনি বলেন, নদীপাড় থেকে চরের গ্রাম পর্যন্ত যদি পাকা রাস্তা নির্মাণ করা যায় তাহলে চাষিদের কষ্ট কমে যাবে। চাষিরা সহজে নদীপাড় পর্যন্ত তাদের ফসল নির্বিঘেœ নিয়ে যেতে পারবেন। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সামশুল হক বলেন, চরের মাটিতে যে কোনো ফসলের আবাদ ভালো হয়ে থাকে। কিন্তু নৌকা ছাড়া ফসল আনার উপায় না থাকার কারণে চাষিরা দাম কিছুটা কম পান। তবে এ বছর দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর