শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

রশি টেনে নদী পারাপার

নাটোর প্রতিনিধি

রশি টেনে নদী পারাপার

দিয়াড় ঘাটে মাঝি ছাড়াই রশি টেনে নদী পারাপার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় দিয়াড়-রহিমানপুর ঘাটে প্রতিদিন রশি টেনে নৌকায় নদী পারাপার হচ্ছেন কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ। বড়াল নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নদীর দুই পাড়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। কেউ কেউ বলছেন, প্রতিদিন পার হচ্ছেন ১০ হাজার মানুষ। এলাকাটিতে শিক্ষার আলো অনেক আগেই পৌঁছে গেছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরোলেও নির্মাণ করা হয়নি ব্রিজটি। ফলে এলাকার উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণ নিয়ে কৃষকদের পাশাপাশি নদী পারাপার নিয়ে সাধারণ মানুষ পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। ব্রিজ নিয়ে সরকারি মহলে দেনদরবার করেও কোনো ফল হয়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, একাধিকবার ব্রিজটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর থেকে মাপজোক করা হলেও কোনো কাজ হয়নি।নদী পারাপারের জন্য এর আগে বাঁশের আড় ছিল। কিন্তু বর্তমানে রয়েছে খেয়া নৌকা। তবে সেই নৌকায় এখন আর মাঝি থাকেন না। কখনো মাঝির স্ত্রী পারাপার করেন। আবার কখনো কখনো যাত্রীরা নিজেরাই নৌকা নিয়ে পারাপার হন। এই আনা-নেওয়ার জন্য এপার-ওপার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে নাইলনের মোটা রশি। এর মধ্যে দেওয়া হয়েছে রডের বালা। যাতে রশি আশা-যাওয়া করতে পারে। যাত্রীরা সেই রশি টেনে নদী পারাপার হয়ে থাকেন। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই রশি টেনেই খেয়া নৌকায় পারাপার হচ্ছেন। বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই এলাকার কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

 যাত্রী পারাপারের জন্য স্থানীয় কয়েক গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় আবদুল হান্নান নামের মাঝি দীর্ঘদিন থেকে পারাপার করতেন। তিনিই নৌকা ও রশির ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু এখন এই আয়ে তার আর চলে না। মাঝি আবদুল হান্নান বলেন, আগের মতো গ্রামের মানুষ টাকা বা ফসল দেয় না। তাই নিজে অন্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, নদীটির উত্তর পাশে রয়েছে একটি বাজার, সরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ ঘনবসতিপূর্ণ দুটি গ্রাম। দক্ষিণ পাশে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, একটি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটসহ তিন গ্রাম। আরও রয়েছে কয়েকশ হেক্টর কৃষি জমি। তাছাড়া নাটোর সদরে যেতে প্রধান সড়কে পৌঁছুতে যাতায়াত করতে খেয়া নৌকাটিই তাদের একমাত্র ভরসা। নদীটির দক্ষিণ পাড়ের বাসিন্দা অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন জানালেন, মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে। ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে পাঁচ গ্রামের মানুষকে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পারাপার হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে দীর্ঘদিন থেকে শুধু শোনা যাচ্ছে ব্রিজটি অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই নেই। বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান জানান, একশ মিটার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ওই ব্রিজটির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হলে সেখানে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে বলে তিনি জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর