মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

স্কুলের মাঠে মোটরসাইকেল কেনাবেচার হাট

মেহেরপুর প্রতিনিধি

স্কুলের মাঠে মোটরসাইকেল কেনাবেচার হাট

মেহেরপুরে বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গায় হাট বসিয়েছেন শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন জুয়েল। কয়েকদিন ধরে মাইকিং করে হ্যান্ডবিল বিলিসহ বিদ্যালয়ের সামনে বড় বড় ব্যানার টাঙ্গিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে তিনি এ হাট বসিয়েছেন। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি তারা কিছুই জানে না। এদিকে হাটের পরিচালক স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন জুয়েল বলছেন তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সম্মতি নিয়েছেন। গ্রামবাসী জানায়, মেহেরপুর সদর থানার আমদহ গ্রামে বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে ওই নেতা গত শুক্রবারে পুরাতন মোটরসাইকেল, নসিমন, করিমন ক্রয় বিক্রয়ের হাট বসিয়েছেন। বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফৌজিয়া আফরোজ তুলি বলেন, হাট পরিচালনাকারীরা আমার কাছে এসেছিলেন। তারা বারবার করে আমাকে বলেছেন হাট বসানোর জন্য রেজুলেশন করতে, আমাকে কিছু টাকাও দিতে চেয়েছিলেন। আমি রাজি হয়নি। উল্টো তাদের বলেছি স্কুল নোংরা করে  আপনারা ব্যবসা করবেন, তা হবে না। আমি বলেছি শিগগির স্কুল খুলবে। তখনতো ভীষণ ঝামেলা হবে।

স্কুল মাঠে কোনোভাবে হাট করার সুযোগ নেই। আমার স্কুল মাঠ কেন হাট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। তিনি বলেন, এ হাটের সঙ্গে স্কুলের সভাপতি দরুদ আলীও জড়িত থাকতে পারেন। তিনিও আমাকে হাটের জন্য ফোন দিয়েছেন। আমি তাকেও না করে দিয়েছি। আমি এই বিষয়টি ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। বিদ্যালয়ের সভাপতি দরুদ আলী বলেন, হাট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা স্ট্যাম্পে লিখিত নিয়েছি বিদ্যালয়ের কোনো ক্ষতি হলে তা তারা পূরণ করে দেবেন। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের কোনো আয় নেই। এ থেকে বিদ্যালয়ের কিছু আয় হবে। তিনি আরও বলেন, এলাকার লোকের দাবি ও আবদার পূরণ করতে এটা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপিল উদ্দিন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাট বসানোর কোনো সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম বলেন, আমার কাছে তারা এসেছিলেন হাটের বিষয়ে কথা বলতে। আমি তাদের জানিয়ে দিয়েছি আমাদের নির্ধারিত হাট রয়েছে। যা আমরা নিয়ম মেনে ইজারা দেই। এর বাইরে আমাদের হাটের অনুমোদন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও হাটের পরিচালক কামাল হোসেন জুয়েল বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য হাট বসানো হয়েছে। এতে কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই মৌন সম্মতি দিয়েছেন। তবে হাটের বিষয়ে যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ বা কারও কোনো আপত্তি থাকে। আমরা হাট অন্যত্র সরিয়ে নেব। তিনি আরও বলেন, আলমডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের হাট চলে। তবে তিনি স্বীকার করেন হাট বসানোর কোনো বৈধ অনুমতি তাদের নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর