মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির বন্যা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির বন্যা

জমে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচন। পাশাপাশি প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পৌরবাসী বলছেন, দিনক্ষণ যত ঘনিয়ে আসছে ততই জমে উঠতে শুরু করেছে নির্বাচনী মাঠ। দ্বিতীয় বারের মতো পৌর নির্বাচনে চার মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া এ পৌর নির্বাচনে মেয়র ও একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও প্রচার প্রচারণায় সরব গোটা পৌর এলাকা। সাগর পাড়ের চায়ের আড্ডায় প্রার্থীর দোষ-গুণ নিয়ে বিশ্লেষণ করছেন সাধারণ ভোটাররা। পছন্দের প্রার্থী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে মাঝে-মধ্যে কড়া আলোচনা-সমালোচনাও করছেন। এছাড়া প্রার্থীর সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও নানা পোস্ট দিয়ে চালাচ্ছেন জোর প্রচারণা। এদিকে প্রার্থীরাও নির্বাচিত হলে আধুনিক পৌরসভা গড়ে তুলতে ও সব নাগরিক-সুবিধা নিশ্চিতসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর  কুয়াকাটা পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বর্তমান মেয়র ও কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. বারেক মোল্লা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টি  থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া মো. আনোয়ার হাওলাদার। তিনি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে ভোট যুদ্ধে লড়ছেন। আনোয়ার হাওলাদার গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া হাত পাখা প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলাম। তিনি বিগত পৌর নির্বাচনেও পাখা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদিকে গত পৌর নির্বাচনে অংশ নেওয়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুুল আজিজ বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এবারের কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনে কৌশলী হয়ে মাঠে কাজ করবে এমন ধারণা অনেকেরই। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৮ জন ভোট প্রার্থনা করছেন।

উঠান বৈঠক, চা-চক্র ও কুশলাদি বিনিময়সহ সামাজিক কর্মকাে র মাধ্যমে ভোট প্রার্থনা করছেন।

 কুয়াকাটা পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনের পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার আয়তন ১৩ বর্গকিলোমিটার। মহল্লা রয়েছে ২৫টি। বর্তমান জনসংখ্যা ৫০ হাজার ১২৭ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার। ২০১১ সালে ৫৫ একর জায়গা নিয়ে পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকেই পৌরসভার কার্যক্রম চলছে নির্বাচিত মেয়র দিয়ে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আ. বারেক মোল্লা জানান, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। গ্রামকে শহরের আদলে গড়ে তোলা এবং দেশকে অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধশালী করাই শেখ হাসিনার লক্ষ্য। এসব লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হলে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। পৌরসভাকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন  পৌরসভা গড়ে তোলা হবে। বিএনপির প্রার্থী আবদুুল আজিজ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমার বিজয় নিশ্চিত। পাশাপাশি কুয়াকাটাকে নতুন রূপে ঢেলে সাজানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলাম মুসল্লি জানান, বিগত নির্বাচনে জনগণ আমার পাশে ছিলেন। তখন ব্যাপক সারা পেয়েছি। আশা রাখি ইনশাআল্লাহ এবারও সাধারণ ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আবদুর রশিদ বলেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর ইভিএম পদ্ধতিতে কুয়াকাটা পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।  পৌরসভায় মোট ভোটার ৮ হাজার ১২২ জন। নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হয়েছে। শতভাগ আশাবাদী যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারব।

সর্বশেষ খবর