শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মুড়িকাটা পিঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত কিষানিরা

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

মুড়িকাটা পিঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত কিষানিরা

মুড়িকাটা পিঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষানিরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফরিদপুর জেলায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে লাগানো হয়েছিল মুড়িকাটা পিঁয়াজ। ফলনও হয়েছে আশাতীত। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন স্থানে কিষানিরা পিঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, চরমাধবদিয়া, ঈশান গোপালপুর, অম্বিকাপুর এবং নগরকান্দা-সালথা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে এখন মুড়িকাটা পিঁয়াজ তোলার ধুম পড়েছে। মাঠে মাঠে এখন কৃষানিদের ব্যস্ততা বেড়েছে। পুরুষের চেয়ে নারীরা পিঁয়াজ তুলতেই বেশি কাজ করছে। নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের কিষানি রাবেয়া বেগম, সুফিয়া খাতুন, বরু খাতুন জানান, এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি পিঁয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। পিঁয়াজ লাগানো থেকে শুরু করে খেতে পানি দেওয়া ও আগাছা নিড়ানোর কাজও কিষানিরাই করে থাকেন। বাড়ির পুরুষরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় পিঁয়াজ তোলার কাজটি তারাই করে থাকেন। তাছাড়া, খেত থেকে পিঁয়াজ তোলার পর সেটির মাথা কেটে বাজারে নেবার জন্য প্রস্তুতও তারাই করেন। পিঁয়াজ তোলা ও কাটার জন্য গ্রামের নারীরা টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে থাকেন। খেত থেকে পিঁয়াজ তোলার জন্য একজন নারী শ্রমিক পেয়ে থাকেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এদের কেউ কেউ আবার টাকার বিনিময়ে পিঁয়াজও নিয়ে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধুমাত্র নগরকান্দা ও সালথা উপজেলাতেই দুই-তিন হাজার নারী পিঁয়াজ তোলার কাজ করছেন। পিঁয়াজ আবাদে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান হচ্ছে ফরিদপুর। এ জেলায় উৎপাদিত পিঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

 এ বছর পিঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ার পরও বর্তমানে বাজার দর দেখে কৃষকের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন ভারতসহ অন্যান্য পার্শবর্তী দেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানি বন্ধ  না করলে এ বছর লোকশানের মধ্যে পড়তে হবে তাদের। এ বছর ফরিদপুর জেলায় ৫ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পিঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন পিঁয়াজ উৎপাদিত হবে। বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি মুড়িকাটা পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

এদিকে, পিঁয়াজের ভরা মৌসুমে কৃষকরা ন্যায্য দাম না পেলে পরবর্তী মৌসুমে পিঁয়াজের আবাদ কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. হযরত আলী। তিনি বলেন, গত বছর পিঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ নিয়ে পিঁয়াজের আবাদ করেছিল। তারা বেশি দামে পিঁয়াজের গুটি কিনে জমিতে লাগিয়েছিলেন। এবার দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর