শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় ৫ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দর

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

করোনায় ৫ কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দর

অদৃশ্য মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ১২ মার্চ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশি যাত্রী পারাপার বন্ধ রেখেছে ভারতের আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট। দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চেকপোস্ট থেকে আয় বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এখন পর্যন্ত আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে সরকার অন্তত ৫ কোটি টাকা হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আখাউড়া স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে ভারতে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকার আয় বঞ্চিত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৫ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার। আবার কবে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে সে সম্পর্কে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে পণ্য আমদানি না হওয়ায় আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে সরকারের কোনো রাজস্ব আয় নেই। শুধু পণ্য রপ্তানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স পেয়ে থাকে সরকার। কিন্তু আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট থেকে যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ মাসে অন্তত পৌনে ১ কোটি টাকা যায় সরকারি কোষাগারে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আগে আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ যাত্রী ভারতে যাতায়াত করতেন। বিভিন্ন উৎসবের সময়গুলোতে প্রতিদিন ১০০০ বেশি যাত্রী গমন করে থাকেন ভারতে।

প্রত্যেক যাত্রীকেই ভ্রমণ কর হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হয়। ফলে সঙ্গত কারণেই আখাউড়া চেকপোস্টটি সরকারে আয়ের অন্যতম একটি উৎস। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মহামারী আকার ধারণ করার পর গত ১২ মার্চ থেকে বাংলাদেশি যাত্রীদের ভারতে প্রবেশ বন্ধ করে দেয় আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট কর্তৃপক্ষ। শুধু কূটনীতিক, অফিশিয়াল, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পের ভিসাধারীদের যাতায়াত সুবিধা রাখা হয়। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত যাত্রী পারাপার বন্ধ রাখার কথা উল্লেখ করে নোটিস জারি করা হলেও এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশি যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়নি। গত ৭ মার্চ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে ১ হাজার ২৭৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক নিজ দেশে ফিরেছেন। তারা করোনাভাইরাসের কারণে ভারতের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছিলেন। এ সময়ের মধ্যে ভারতে গমন করেছেন কেবল ১০৯ জন বাংলাদেশি। একই সময়ে ৮২৪ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন ১ হাজার ৩৬৬ জন। আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের ইনচার্জ আবদুল হামিদ বলেন, আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে পারাপার হওয়া যাত্রীদের সিংহভাগই পর্যটক ভিসাধারী। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটক ভিসাধারীদের প্রবেশাধিকার স্থগিত রাখা হয়েছে। সম্প্রতি নতুন করে যারা চিকিৎসা ভিসা নিয়েছেন-তাদের ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগে যারা ভিসা নিয়েছিলেন তারা প্রবেশ করতে পারছেন না। কবে নাগাদ যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে সে সম্পর্কে আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো পর্যন্ত কিছু জানায়নি আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট কর্তৃপক্ষ।

 

সর্বশেষ খবর