রবিবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ফসলি জমির মাটি ইটভাটায়

লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

ফসলি জমির মাটি ইটভাটায়

কুমিল্লার  লালমাই উপজেলায় ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ভাটায় নিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। ফলে আবাদি জমির পুষ্টি উপাদান কমে কৃষিপণ্যের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা  গেছে, উপজেলায় মোট ৮ হাজার ১৪৫ হেক্টর তিন ফসলি আবাদি জমি রয়েছে। এসব জমিতে ধান, পাট, গম, ভুট্টা, আলু, সরিষা, মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন জাতের কৃষিপণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে সরকারি নিয়ম অমান্য করে এসব আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ইট তৈরি করছেন ইটভাটার মালিকরা। ফসল উৎপাদনের জন্য শতকরা ৫ ভাগ যে  জৈব উপাদান দরকার। সাধারণত মাটির ওপর থেকে ৮ ইঞ্চি গভীর পর্যন্ত থাকে। কিন্তু ইটভাটার মালিকরা মাটির উপরিভাগের এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত কেটে নিচ্ছেন। এতে কেঁচোসহ উপকারী পোকামাকড় নষ্ট হচ্ছে। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার ফয়েজগঞ্জ, আলীশ্বর, বাগমারা, দত্তপুর, গোসাই পুস্কুরনী,  প্রেমনল, জালগাঁও, আজবপুর, বাংলাবাজার, গোলাচোঁ কাপাসতলা গ্রামে ১১টি ইটভাটা রয়েছে। সরকারি বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ সাড়ে চার বিঘা অকৃষি জমিতে একটি ইটভাটা নির্মাণের নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। এ ছাড়া বেশির ভাগ ইটভাটা তৈরি করা হয়েছে জনবসতি এলাকায়। ইটভাটা সূত্রে জানা  গেছে, প্রতিটি ভাটায় বছরে ৫০-৫৫ লাখ ইট তৈরি হয়। প্রতি হাজার ইট তৈরি করতে প্রায় ৮৮ ঘনফুট মাটি প্রয়োজন। সেই হিসেবে একটি ইটভাটায় বছরে প্রায় পাঁচ লাখ ঘনফুট মাটি দরকার হচ্ছে। মালিকেরা এক হাজার ঘনফুট মাটি মাত্র ৫০০-৭০০ টাকায় কৃষকের জমি থেকে কেনেন।

এলাকার অনেকে জানান, কৃষকরা জমির উর্বরতা শক্তির ক্ষতির দিক চিন্তা না করে সাময়িক লাভের আশায় অবাধে এসব মাটি বিক্রি করছেন। আলীশ্বর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, টাকার লোভে জমির মাটি বিক্রি করি। কিন্তু মাটিকাটা জমিতে ফসলের এত বড় ক্ষতি হয়, তা আমরা জানি না। রাতদিন মাটিবাহী ট্রাক্টরের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় জনগণ। ধুলায় বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  মো. জুনায়েদ কবীর খান বলেন, ‘কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় পুষ্টি উপাদান কমে গিয়ে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কৃষি বিভাগ থেকে ব্যবস্থা  নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর