সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

নামেই আধুনিক হাসপাতাল

চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, হবিগঞ্জ

নামেই আধুনিক হাসপাতাল

নামেই হবিগঞ্জ জেলা আধুনিক হাসপাতাল। হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হলেও বাস্তবে ১০০ শয্যার জনবলও নেই। রয়েছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট। এলাকাবাসীর অভিযোগ জোড়াতালি দিয়েই চলছে এই হাসপাতালটি। ফলে কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার সাধারণ মানুষ। জেলাবাসীকে উন্নতসেবা দানের জন্য  নির্মিত হয়েছে সাততলা ভবন। নামে মাত্র আধুনিক হলেও নেই আধুনিকতার ছোঁয়া। হাসপাতালের অধিকাংশ ভবন বর্তমানে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। হাসপাতালে আসা সাধারণ রোগীরা বলছেন, কাগজে কলমে শয্যা সংখ্যা বাড়লেও কমেছে সেবার মান। বাস্তবে শয্যা সংখ্যা ২০০ হবে না। দীর্ঘদিন ধরে নেই বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, শূন্য বহু নার্স ও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদ। চিকিৎসকের ৩৭ পদের মধ্যে খালি পড়ে আছে ১৩টি। নার্সের ১৪০ পদের মধ্যে ৫৫টি শূন্য। তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদও ৩১টি শূন্য রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দুটি এক্সরে মেশিন থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে বিকল রয়েছে একটি। নেই এনআইসিইউ ও আইসিইউ। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ১১টি ওয়ার্মার থাকলেও সচল মাত্র ৭টি। একেকটি ওয়ার্মারে ১টি বাচ্চা রাখার কথা থাকলেও এতে রাখা হয় চারজন করে। ১টি মাত্র ইনকিউবেটর। প্রায় সময়ই অচল থাকে। দুটি ফটো থেরাপি থাকলেও সচল মাত্র ১টি। জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ দিনে মারা গেছে ২৩ নবজাতক। এর বাইরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে মারা গেছে আরও এক নবজাতক। সদর উপজেলার চরহামুয়া গ্রাম থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নুরজাহান নামে এক রোগী অভিযোগ করে জানান, তিনি এক্সরে রুমে গেলে তাকে বলা হয় মেশিন নষ্ট। এ সময় প্রাইভেট ক্লিনিকে এক্সরে করার পরামর্শও দেওয়া হয় তাকে। শায়েস্তাগঞ্জের কলিম নগর গ্রামের বাসিন্দা রহিমা খাতুন তার নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডে গেলেও ওয়ার্মার মেশিন সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা পাননি। পৌর নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক পীযূষ চক্রবর্তী বলেন, জেলা সদরের হাসপাতালটি শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হয়েছে। হাসপাতালও ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। তারপরও এভাবে নবজাতকের মৃত্যু কাম্য নয়। নবজাতকের মৃত্যুর হার কমাতে এনআইসিইউর ব্যবস্থা করা জরুরি। ভৌগোলিক কারণে এখানে বিভিন্ন এলাকার রোগী আসেন। কিন্তু যদি চিকিৎসা সুবিধা না বাড়ানো হয় তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়। এর আগে এখানে আইসিইউ ও পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার কথা থাকলেও আমরা এর দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখছি না।

 পিসিআর ল্যাব না থাকায় নিয়োগ পাওয়া জনবল অলস সময় পার করছেন। হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন জানান, আমরা শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বর্তমানে নিয়মিত দুজন ডাক্তার দায়িত্বে থাকেন। পাশাপাশি নিয়মিত মনিটরিং করছেন এনজিও সংস্থা মা-মণি। চিকিৎসা যন্ত্রপাতির সংকট নিয়ে আমরা কাজ করছি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর