মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

অনিয়মে ডুবছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

অনিয়মে ডুবছে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ

কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও শেষ করা যায়নি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। কেন সময়মতো কাজ শেষ হয়নি তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই নড়েচড়ে বসেছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। অতীতের দুই প্রকৌশলীর অপকর্ম আর সমন্বয়হীনতায়ই ডুবেছে জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প। তা উঠে এসেছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে। জানা যায়, ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০১১ সালে মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট টেনিং ইনস্টিটিউট (ম্যাটস) ভবনে অস্থায়ীভাবে যাত্রা শুরু হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের। ২০১৩ সালে শহরের লাহেনী এলাকায় ২০ একর জায়গার ওপর ২৭৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে নির্মাণ শুরু হয় এ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন প্রকল্পের কাজ। ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা থাকলে আজও শেষ হয়নি কাজ। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘২০১২ সালে যখন টেন্ডার আহ্বান করা হয় তখন কুষ্টিয়া গণপূর্তে নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন শাহিন মিয়া। তিনি একসঙ্গে ছয়টি ভবনের টেন্ডার করেন। টেন্ডার শেষে কাজ শুরু না হতেই অগ্রিম বিল দেন ঠিকাদারদের। অভিযোগ আছে, এজন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে তিনি ৫ কোটি টাকার বেশি কমিশন নিয়ে ঢাকায় পোস্টিং হন। এরপর যোগ দেন মোহাম্মদ শহিদ কবির। তিনিও কমিশন বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন। ঠিকাদারদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে হাতিয়ে নেন কোটি টাকা। তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিন মিয়া বলেন, ‘তারা যথাযথ নিয়ম মেনে টেন্ডার করেছিলেন। কোনো অনিয়ম হয়েছে বলে তার জানা নেই।’ ২০১৮ সালে নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থ ছাড় করা হয়। তখন থেকে কাজ তদারকির দায়িত্বে আছেন মানিক লাল দাস। তিনি গণপূর্ত যশোর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক। অভিযোগ আছে, তিনি দীর্ঘদিন এ কাজের সঙ্গে থাকলেও সাইট পরিদর্শনে আসেন না ঠিকমতো। এরই মধ্যে একটি ভবনের নির্মাণাধীন ছাদ ধসে পড়ে। এতে মানিক লাল দাসের অবহেলা ছিল বলে ধরা পড়ে। তবে অন্যরা শাস্তি পেলেও তিনি পার পেয়ে যান। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মানিক লাল বলেন, ‘সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে।’

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবনের পিডি ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন করে জমি অধিগ্রহণ ও আরও কিছু ভবন নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগের যেসব কাজ চলমান তা শেষের পথে।’ কুষ্টিয়া গণপূর্তের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘গত দেড় বছরে চেষ্টা করেছি মান শতভাগ ঠিক রেখে দ্রুত কাজ শেষ করতে। আমার সময়ে বেশিরভাগ শেষ হয়েছে। সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর