শনিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

খাল খননের নামে গাছ নিধন

চাঁদপুর প্রতিনিধি

খাল খননের নামে গাছ নিধন

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে রুমুর খাল খননের নামে চলছে বড় বড় গাছ নিধন। একটি প্রতিষ্ঠান ১০-১২ দিন আগে খাল খননের কাজ শুরু করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননের নামে খালের দুপাশের গাছপালা কেটে নিধন করার অভিযোগ উঠেছে। খালের আশপাশের বাসিন্দাদের শত বছরের পুরনো গাছের সঙ্গে তাল, খেজুর, আম ও বিভিন্ন ফলের গাছও কাটতে দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খালের দুপাশের গাছপালা কেটে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লোকজন মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছে। চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দুটি খাল খননের কাজ পেয়েছে মেসার্স সামছ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেডে। ২০১৯ সালে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পেলেও নানা জটিলতায় সময়মতো খনন কাজ শুরু করতে পারেনি। অতঃপর ২০২০ সালের  ডিসেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি রুমুর খাল খননের কাজ শুরু করে। খালের দুপাশে শত বছরের গাছ কেটে খাল খনন কার্যক্রম শুরু করলে স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিস বিষয়টি চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা নড়েচড়ে বসে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তিনটি কারণ উল্লেখ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। প্রথমত, এ কাজের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সমন্বয়কারী হিসেবে রাখা, দ্বিতীয়ত, খালের পাড়ে জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে কোনো গাছ না কাটা, তৃতীয়ত, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ ও প্রকল্পে কাজের বিস্তারিত উল্লেখ করে ছয়টি সাইন বোর্ড সাঁটানো। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইফ্রল ইসলাম সরকার জানান, নদী-খাল খনন, সেচ প্রকল্পের উন্নয়ন জমিতে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এর অংশ হিসেবে আমরা এই প্রকল্পের কাজ পেয়েছি। কিন্তু করোনার কারণে আমরা সময়মতো কাজ শুরু করতে পারিনি। এখন জোরেশোরে কাজ চলছে। সাধারণ মানুষ এ খাল খননে আমাদের সহযোগিতা করছেন। এভাবে চললে আগামী জুনের মধ্যে খাল খননের কাজ সমাপ্ত হবে। তিনি গাছ কাটার বিষয়ে বলেন, ভেকু মেশিনের মাধ্যমে খাল খননের টেন্ডার পেয়েছি। গাছপালা না কাটলে ভেকু মেশিন দিয়ে কীভাবে কাজ করব। আপাতত যেখানে গাছপালা নেই সেখানেই খনন কাজ করছি। এক দিন কাজ বন্ধ রাখলেও ভেকু মেশিন ভাড়া আড়াই হাজার টাকা গুনতে হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে এলাকায় গাছ কাটার জন্য মাইকিং করার কথা স্বীকার করে বলেন, কে বা কারা মাইকিং করেছে তা তিনি জানেন না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বরত প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ৯ কিলোমিটার ৭১৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ খালটি খননে ৬৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৩ টাকার কাজটি সামছ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন পেয়েছে। খালটি প্রস্থে ১৪ ফুট, ৬৫ ফুট গভীরতায় খনন কাজ করতে হবে। তবে খনন কাজের নামে কোনো গাছ কাটা যাবে না। আপাতত কাজটি বন্ধ থাকবে। ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে পরবর্তী কাজ শুরু হবে। এমনকি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাত দিয়ে যাতে কেউ গাছ না কাটে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর