মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতায় আবাদ হচ্ছে না ১০ হাজার একর জমিতে

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

জলাবদ্ধতায় আবাদ হচ্ছে না ১০ হাজার একর জমিতে

কুমিল্লার আনকি জলা (বিল), সিঙ্গারিয়া জলা ও পয়াতের জলা তিনটি পাশাপাশি। তিন বিলে জলাবদ্ধতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার একর জমি। এসব বিলকে যুক্ত করেছে ঘুংঘুর নদী। এ নদীর এবং শাখা খালের বিভিন্ন স্থানে ভরাট, অপরিকল্পিত ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় নদীর প্রবাহ বিঘ্নিত হয়েছে। এতে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নে আনকি জলা, আমড়াতলী ইউনিয়নে সিঙ্গারিয়া জলা ও বুড়িচং উপজেলার ষোলনল, বাকশীমূল ও রাজাপুর ইউনিয়নে পয়াতের জলার অবস্থান। সূত্রমতে, আনকি জলায় রয়েছে ১০টি গ্রামের বাসিন্দাদের ৩ হাজার একর জমি। এর মধ্যে ২ হাজার একর জমি জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ করা যায় না। সিঙ্গারিয়া জলায় রয়েছে ১৫টি গ্রামের মানুষের জমি। এখানে রয়েছে ৫ হাজার একর জমি। এই বিলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে প্রায় ৩ হাজার একর জমি। পয়াতের জলায় রয়েছে ৫০টি গ্রামের মানুষের জমি। এই বিলে ২০ হাজার একর জমি রয়েছে।

তার মধ্যে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে ৫ হাজার একর জমি। আমড়াতলী ইউনিয়নের সিঙ্গারিয়া জলায় সরেজমিন দেখা যায়, এখানে আগে দুই ফসল হলেও এখন এক ফসলও সব জমিতে হয় না। এই বিলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে প্রায় ৩ হাজার একর জমি। তার মধ্যে ১ হাজার একর জমি অনাবাদি থাকে। বিলজুড়ে গুল্মলতা আর ঘাস রাজত্ব করছে। জলাবদ্ধতার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেকে জমি চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এতে বাঁশমঙ্গল, দুতিয়ার দিঘির পাড়, রঘুপুর, তৈলকুপি, ভুবনঘর, শামুকমুড়া, কৃষ্ণপুর, শিমপুর, যশপুরের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানান, ঘুংঘুর নদী দ্রুত খনন না করলে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বাড়বে। দুই উপজেলায় ফসল উৎপাদন কমবে। সৃষ্টি হবে খাদ্য সংকট। ষোলনল ইউনিয়নের সোনাইসার গ্রামের বাসিন্দা আবদুছ ছালাম বেগ বলেন, পয়াতের জলার জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখানের জলাবদ্ধতা দূর করা গেলে কৃষকের মুখে হাসি উঠবে। বিলগুলোর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ নিয়ে এক দশক ধরে আন্দোলন করা স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে দিনের পর দিন বিভিন্ন দফতরে ঘুরছি। এসব বিল সংলগ্ন ঘুংঘুর নদী ও এর শাখা খালের বিভিন্ন স্থানে ভরাট হয়ে গেছে। অপরিকল্পিত ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণে নদীর প্রবাহ বিঘ্নিত হয়েছে। এতে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নদী ও খালগুলো খনন না হলে এই এলাকার মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে। বিএডিসি কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, পয়াতের জলার পাশের একটি খাল খনন করেছি। পর্যায়ক্রমে অন্য নদী ও খালগুলোও খনন করা হবে।

সর্বশেষ খবর