রবিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়মের অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হঠাৎ করে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে অনুমোদিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম গেরিলাকে। ক্ষোভ জনিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই চলাকালে গতকাল দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমবেত হয়ে তারা এ যাচাই-বাছাই বন্ধের আহ্বান জানান। জানা যায়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সুপারিশবিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত যাচাই-বাছাই এর জন্য সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরেও একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, দৌলতপুর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও দৌলতপুর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম গেরিলাকে। কাউকে না জানিয়ে গত শুক্রবার রাতে কেন্দ্র অনুমোদিত সভাপতি নজরুল ইসলাম গেরিলাকে বাদ দিয়ে কাউছার আলী নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ওই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ কমিটির কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটির দুজন সদস্য মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নামে এক তালিকায় অন্তর্ভুক্তসহ যাচাই-বাছাইয়ে অংশ নেওয়া সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। তারা কমিটির বিতর্কিত সদস্যদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে যাচাই-বাছাই করার আহ্বান জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান জানান, রাতের আঁধারে কেন্দ্র অনুমোদিত সভাপতি নজরুল ইসলাম গেরিলাকে বাদ দেওয়া মানে দৌলতপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নামে ব্যাপক অর্থবাণিজ্য হচ্ছে। যাচাই-বাছাই এ টিকিয়ে দিতে ৬০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম গেরিলা জানান, ‘আমি থাকলে অর্থবাণিজ্য করা যাবে না বলে আমাকে ষড়যন্ত্র করে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুনছি রাতের আঁধারে ব্যাপক অর্থ লেনদেন হয়েছে। কমিটিতে আমি থাকলে সেটা হতো না। এর সঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ‘এখানে কাগজ কথা বলবে। যার কাগজপত্র সঠিক রয়েছে তাকে বাদ দেওয়ারও সুযোগ নেই। আবার যার কাগজপত্র ঠিক নেই তাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করারও সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এখানে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার অফিসের কেউ যদি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কেন্দ্র অনুমোদিত কমিটি থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নজরুল ইসলাম গেরিলাকে বাদ যাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর