সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ফরিদপুরে ‘পাতা পিঁয়াজ’ আবাদ শুরু

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ফরিদপুরে ‘পাতা পিঁয়াজ’ আবাদ শুরু

পিঁয়াজের চাহিদা মেটাতে এবার বিকল্প হিসেবে নতুন জাতের পাতা পিঁয়াজের উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে আবাদ করা হয়েছে ফরিদপুর মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রে। স্বাদে-গন্ধে একই রকম হওয়ায় বারি জাতের এই পাতা পিঁয়াজের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে পিঁয়াজের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে। সারা বছর এই পাতা পিঁয়াজ বাড়ির আঙিনায়, ছাদের টবেও আবাদ করা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন কৃষিবিদরা। গত বছরের প্রথমদিকে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে পিঁয়াজের। দেশের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয় পিঁয়াজ। কিন্তু দাম কমেনি। বাজার নিয়ন্ত্রণ, চাহিদা মেটানো ও বৈদেশিক নির্ভরতা কমাতে বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবন করেছে বারি পাতা পিঁয়াজ-১ নামের নতুন একটি জাত। ফরিদপুরে মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রে এই পাতা পিঁয়াজের পরীক্ষামূলক আবাদ শেষে তা ছড়িয়ে পড়েছে কৃষক পর্যায়ে। চারা রোপণের দুই মাস পর থেকেই পাতা সংগ্রহ করা যায়। মে-জুন মাসে বীজ বপন করলে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ বার পাতা সংগ্রহ করা যায়। সব মাটিতে আবাদ হলেও বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো ফলন হয়। ৪০-৫০ সেন্টিমিটার উচ্চতার প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে ৪-৫টি করে চারা বের হয়। হেক্টরপ্রতি ৭ থেকে ৮ টন পাতা পাওয়া যায়। বসতভিটা অথবা বাড়ির ছাদের টবেও চাষ করা সম্ভব এই পাতা পিঁয়াজ। কৃষি খাতে নতুন এ উদ্ভাবন উৎসাহী করেছে অনেককেই। পাতা পিঁয়াজের বিষয়টি জানতে পেরে আগ্রহী অনেক চাষিই পরামর্শ নিতে ও পাতা পিঁয়াজের আবাদ করতে আসছেন মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রে। নগরকান্দা থেকে পাতা পিঁয়াজের বিষয়ে ধারণা নিতে এসেছিলেন কৃষক মুন্নু মাতুব্বর। তিনি বলেন, লোকমুখে পাতা পিঁয়াজের কথা শুনে এখানে তা দেখতে এসেছি। নতুন এ জাতের পাতা পিঁয়াজের আবাদ করা যায় কিনা তা দেখি। পিঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ ও চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এই পাতা পিঁয়াজ। প্রসার ঘটাতে কৃষক ও আগ্রহী পর্যায়ে কাজ করছে মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র। ফরিদপুর মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রের ঊধ্বর্তন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলাউদ্দিন জানান, পাতা পিঁয়াজের বিষয়টি কৃষকদের নজরে এসেছে। এটির ব্যবহার বাড়াতে এখানে প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে পাতা পিঁয়াজের চাষ করে সাফল্য পাওয়া গেছে। পাতা পিঁয়াজটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছে মসলা গবেষণা ফরিদপুরের উপকেন্দ্র। এটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে পিঁয়াজের চাহিদা কমে আসবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. হজরত আলী বলেন, দেশের পিঁয়াজের সংকটময় সময় পিঁয়াজের ব্যবহার কমিয়ে পাতা পিঁয়াজের ব্যবহার বাড়াতে পারলে বিদেশ থেকে পিঁয়াজ আমদানি করতে হবে না।

সর্বশেষ খবর