সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বগুড়ায় অস্তিত্বহীন ১১ মাদরাসার সন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ায় অস্তিত্বহীন ১১ মাদরাসার সন্ধান পেয়েছে প্রশাসন। জেলার শেরপুর উপজেলায় সুখানগাড়ী নজীরুন আজিজুল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। এরপরও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে সব কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরে। সেই সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াও চলছে অস্তিত্বহীন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। আর এই কার্য সম্পন্ন করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ চারজন কর্মকর্তার স্বাক্ষরও জাল করা হয়। এমন ১১ অস্তিত্বহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সন্ধান মিলেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায়। এমনকি ওইসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে অন্তত ৩০ লাখ টাকার বাণিজ্য করেছে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ঘটনাটি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক দফতরে লিখিত অভিযোগ হয়েছে।

বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতি শেরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমানের যৌথ স্বাক্ষরিত ওই অভিযোগে জানা যায়, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার তথ্য চাওয়া হয়। সে মোতাবেক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে এই উপজেলার মোট ৪৫টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার তথ্য সংবলিত সকল কাগজপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু ওই উপজেলায় গড়ে ওঠা একটি সংঘবদ্ধ চক্র স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নিয়ে বাণিজ্য শুরু করেন বলে জানা যায়। কোনো অস্তিত্ব নেই এমন এগারোটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া কাগজপত্রও তৈরি করেন তারা। এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। এমনকি অস্তিত্বহীন ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সহজ-সরল ব্যক্তিদের নিকট থেকে অন্তত ত্রিশ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

আর এসব টাকা হালাল করতে স্বতন্ত্র মাদরাসার তথ্য যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া কাগজপত্র মন্ত্রণালয় ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজেও একটি মাদরাসা শিক্ষক। তাই জাল স্বাক্ষর ও কাগজপত্র তৈরি করে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা গড়ে তোলার প্রশ্নই আসে না। এদিকে বিগত দুই সপ্তাহ আগে ওই অভিযোগটি তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। পাশাপাশি তিন কার্যদিবসের মধ্যে ওই তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু একমাস পার হতে চললেও প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী সেখ জানান, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিন সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তবে অদ্যাবধি তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাননি তিনি।

সর্বশেষ খবর