সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ফরিদপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের হিড়িক

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ফরিদপুরে অবৈধ বালু উত্তোলনের হিড়িক

ফরিদপুরের সালথায় নদ-নদী খাল-বিল ও কৃষি জমিতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালী একটি চক্র। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের অবস্থান মুখে কঠোর থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের মৌখিক নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে উপজেলার সর্বত্র বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি একদিকে হুমকির মুখে নদ-নদীর দুই পাড়ে থাকা কাঁচাপাকা সড়ক অন্যদিকে আশঙ্কাজনকহারে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি। ধ্বংস হচ্ছে কৃষিনির্ভর সালথার ফসলি জমি ও সরকারি হাটসহ বসতবাড়ি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে দুই একটি ড্রেজার মেশিনের ওপর কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দায় সারলেও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ ড্রেজার বাণিজ্য। এতে স্থানীয়দের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রভাবশালী চক্র প্রতিটি ড্রেজার মেশিন মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ৩০ থেকে ৩৫টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন চলমান আছে। দেখা যায়, সব মিলিয়ে এসব ড্রেজার মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্র।  সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বল্লভদী গ্রামে কৃষিজমি ও একটি নিরীহ অসহায় পরিবারের বসতবাড়ির পাশে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে সড়ক ভরাট করছেন এক  প্রভাবশালী। ওই নিরীহ পরিবারটির বসতভিটায় ভাঙন ধরেছে। প্রতিবাদ করতে গেলে ওই পরিবারকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দীর পাশে কুমার নদীতে ২টি ও মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাকদী সরকারি বাঁওড়ে ২টি অবৈধ ড্রেজার মেশি বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ওই জমি ভরাট করছেন দীর্ঘদিন ধরে। সোনাপুর খালের ওপর একটি, নটখোলায় ১টি, ফুকরা বিলে দুটি, নিধিপট্টি স্কুলের পাশে একটি, হুগলাকান্দী একটি, তুগোলদিয় একটি, গট্টি শাহমখদুম মাজারের সামনে একটি, আগুলদিয়া খালে দুটি, আটঘরের বিভাগদী একটি, খোয়ার একটি, বারখাদিয়া কৃষিজমিতে একটিসহ প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় নদ-নদী, খাল-বিল ও ফসলি জমিতে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালী চক্র। ও তাদের সহযোগীরা।

 নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ড্রেজার মেশিন মালিক বলেন, প্রভাবশালী একটি চক্রের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনকে প্রতি মাসে প্রতিটি ড্রেজার মেশিন থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়। সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিগগির ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।

সর্বশেষ খবর