সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দুর্গম পদ্মার চরে বিদ্যুৎ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

দুর্গম পদ্মার চরে বিদ্যুৎ

ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢেকে থাকা ১৫০ বছরের পুরনো পদ্মা চর উদ্ভাসিত হলো বিদ্যুতের আলোয়। স্বপ্নপূরণ হলো কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর চিলমারী ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষের। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় এই চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা। রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল প্রায় ১৫০ বছর আগে জনবসতি গড়ে ওঠে। এ চরাঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করে। ভারত সীমান্ত ঘেঁষা এসব গ্রাম পদ্মা নদীর কারণে মূল ভূ-খন্ড থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে নৌকাযোগে যাতাযাত সুবিধা থাকলেও শুকনো মৌসুমে এসব অঞ্চলে যাতায়াতে নানা বিড়ম্বনা দেখা দেয়। গ্রীষ্ম মৌসুমে চারদিকে শুধু ধু-ধু বালুচরই চোখে পড়ে। এ সময় চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামগুলো পরিণত হয় ভুতুড়ে জনপদে। আলোর ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় বাজারগুলোও প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। দিনে সূর্যের আলো থাকলেও রাতের অন্ধকার দূর করতে বিদ্যুতের আলো এই অঞ্চলের মানুষের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। সেখানকার মানুষের দীর্ঘ দিনের সেই স্বপ্ন গতকাল বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বিদ্যুতের আলো পেয়ে চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। ওই এলাকার ঠোটারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজাহার মন্ডল জানান, চরে বিদ্যুতের আলো আসবে তা কখনো চিন্তাও করেননি তারা। বিদ্যুৎ আসার ব্যাপক এলাকা বিদ্যুতের মাধ্যমে সেচের আওতায় আসবে। একদিকে উৎপাদন খরচ কমবে। অন্যদিকে ফলন বাড়বে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, চরের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় চরের মানুষের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এসব এলাকায় ছোট ছোট কল কারখানা গড়ে উঠবে। দৌলতপুর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) কে এম তুহিন মির্জা জানান, দুর্গম চর হওয়ায় সেখানে বিদ্যুতের লাইন স্থাপন ও মালামাল পরিবহন খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। পদ্মা নদীর মাঝ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর