বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে কমে যাচ্ছে ফসলি জমি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ফসলি জমিতে খনন করা হচ্ছে পুকুর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

অপরিকল্পিতভাবে একের পর এক পুকুর খনন, খাল-জলাশয়ের মুখ ভরাট ও জলাবদ্ধতার কারণে সিরাজগঞ্জে দিন দিন কমছে ফসলি জমি। ফলে কমে যাচ্ছে ধান ও সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন। অপরিকল্পিত পুকুর খনন বন্ধসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ জেলা। এ জেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও সলঙ্গায় বিপুল পরিমাণ সরিষা ও ধান আবাদ হয়। গত কয়েক বছরে ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষক আবাদি জমিতে পুকুর খনন শুরু করে। যেখানে সেখানে পুকুর খনন করায় একদিকে যেমন আবাদি জমি কমছে অন্যদিকে বন্ধ হচ্ছে পানি নিষ্কাশন। জলাবদ্ধতার জন্য শত শত বিঘা জমিতে ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া খাল-জলাশয় ও নয়নজুলি দখল করে কেউ কেউ বসতভিটা নির্মাণ করায় বহু জমি পতিত পড়ে আছে। জানা যায়, শুধু জলাবদ্ধতার কারণে এ বছর জেলার কয়েক হাজার কৃষক সরিষা আবাদ করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাড়াশের কৃষক মুনজুর জানান, যত্রতত্র জমির মধ্যে পুকুর কেটে পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আগে যেসব খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন হতো সেসব খাল দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। জমি থেকে পানি বের হতে না পারায় এবার কেউ সরিষা আবাদ-তো করতেই পারিনি, আগামীতে ধান কীভাবে লাগাব সে চিন্তায় রয়েছি। একই এলাকার কৃষক জুলমাত আলী জানান, প্রতি বছর সরিষা আবাদ করে সেই ফসল বিক্রি করে ধান লাগানো হয়। এবার জলাবদ্ধতার কারণে সরিষা আবাদ সম্ভব হয়নি। এতে আমরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখন সুদে টাকা নিয়ে ধান রোপণ করতে হবে। চৌহালীর কৃষক আমির জানান, মোকারপাড়া সড়ক ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় প্রায় তিন শতাধিক কৃষক এবার ফসল উৎপাদন করতে পারেননি। দ্রুত ভাঙা অংশ সংস্কার ও মাটি ভরাট না করলে সামনের বছর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, আসলে পুকুর খনন বন্ধে আমাদের কিছু করার নেই। তারপরও পুলিশ-প্রশাসনের সহায়তায় যতটুকু পারি অপরিকল্পিত পুকুর খনন বন্ধ করছি এবং কৃষকদের সচেতন করছি। জলাবদ্ধতা নিরসনে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ জানান, আবাদি জমিতে পুকুর খনন এখন জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত পুকুর খনন বন্ধ শুধু প্রশাসন দিয়ে নয়-কৃষকরা সচেতন হলে সমস্যাটি সমাধান হবে।

সর্বশেষ খবর