সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দিনাজপুরে ১৫ কোটি টাকার আম উৎপাদনের সম্ভাবনা

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দিনাজপুরে ১৫ কোটি টাকার আম উৎপাদনের সম্ভাবনা

ফাল্গুন শুরুর পর থেকে দিনাজপুরের সর্বত্রই গাছে গাছে উঁকি দিয়েছে বিভিন্ন জাতের আমের মুকুল। বাগানগুলোতে এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। আবার কোনো কোনো গাছে আমের গুটিও ধরেছে। এখন বাগানে বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আবার কেউ কেউ উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের নানান পদক্ষেপ নিচ্ছেন। যাতে আমের ভালো দাম ও ফলন পাওয়া যায়। এবার কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকার আম বিক্রি করার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে উৎপাদন বাড়বে। সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও পরিবহন, রপ্তানিসহ বাজারজাত করতে পারলে কৃষক ব্যাপক লাভবান হবে। এমনটাই বলছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করছেন বাগান মালিক ও আম ব্যবসায়ীরা। আবার অনেক ব্যবসায়ী দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির চিন্তা ভাবনা করছেন। সেই লক্ষ্যে ভালো ফলন পেতে এবং সংরক্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিচর্যায়। হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, রুপালি, বারি-৪, গৌরমতি, আম্রপলি, গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ হচ্ছে দিনাজপুরে। নবাবগঞ্জ, কাহারোল ছাড়াও দিনাজপুরের সব উপজেলায় আম চাষ হচ্ছে। তবে ভালো ফলনে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে নবাবগঞ্জের আম ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা। বাগানে চলছে আমের মুকুল আটকে রাখতে পরিচর্যাসহ ওষুধ স্প্রেকরণ। নবাবগঞ্জে কৃষক কৃষি জমিতে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করছেন আম। স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে আম রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনাজপুরের আম বিক্রি হয়। নিরাপদ ও মানসম্মত আম উৎপাদন করে বাজারজাতকরণে নবাবগঞ্জে শতাধিক আম চাষির সমন্বয়ে ২০১৬ সালে ‘মাহমুদপুর ফল সমবায় সমিতি লিমিটেড’ গঠিত হয়েছে।

ঋণ সুবিধাসহ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ অঞ্চলের আম বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে বলে জানান মাহমুদপুর ফল সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান। মাহমুদপুর ফল সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান জানান, আমার নিজেরই ১৭ বিঘা জমিতে আম চাষ করছি। ভালো ফলনের আশাও করছি। সব আম বাগানে এসেছে সম্ভাবনাময় মুকুল। নিরাপদ, মানসম্মত ফল উৎপাদনে পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছি। নবাবগঞ্জেই ৮০৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এখানে প্রচুর পরিমাণে হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, রুপালি, বারি-৪ জাতের আমই চাষ হয়। এ উপজেলায় প্রতিবছর প্রায় ৮ কোটি টাকার আম বিক্রি হয়। এ অঞ্চলের আম মানসম্মতভাবে উৎপাদন করে বিদেশে যেন পাঠানো সম্ভব হয় এ লক্ষ্যে প্রশাসনের সহায়তাসহ সার্বিক সহায়তা কামনা করেন চাষিরা। উল্লেখ্য, বিভিন্ন বাগানে আম চাষ হচ্ছে তাই নয়। এ ছাড়াও কিছু কিছু বাড়ির উঠানে কিংবা প্রতিষ্ঠানের সামনেও আম গাছে মুকুলের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। জেলায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে এবং উৎপাদন হতে পারে প্রায় এক লাখ টন আম।

সর্বশেষ খবর