মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সেতু না থাকায় ১৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

মেহেরপুর প্রতিনিধি

সেতু না থাকায় ১৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি

মেহেরপুর জেলা শহরে একটি সেতুর অভাবে ১৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে। জেলা শহরের উত্তরে গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়াসহ ১৫ গ্রামে প্রায় কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। কৃষিনির্ভর এ ১৫ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ ভৈরব নদের ওপর গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া বাঁশের সাঁকো। একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো দিয়েই কয়েক লাখ মানুষকে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শত বছরের এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আজও সুনজর পড়েনি কারও। ফলে দুটি উপজেলার (সদর ও গাংনী) মানুষের সেতুবন্ধন অধরাই রয়ে গেছে। গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে দুটি উপজেলার (সদর ও গাংনী) ১৫ গ্রামের লাখ লাখ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে থাকেন। এ ১৫ গ্রামের মানুষকে নিত্যদিনের কৃষিপণ্য বিপণন, চিকিৎসা ও শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাতায়াত, মুমূর্ষু রোগী আনা-নেওয়া সব কিছুরই একমাত্র ভরসা এই বাঁশের সাঁকো। গত বছরের ভারি বর্ষণে বাঁশের সাঁকোটি পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। ফলে বাঁশের সাঁকোটি এখন দুর্বল কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তার পরেও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতি প্রয়োজনে সাঁকোটি দিয়ে পারাপার করছেন। সাঁকোটি ভেঙে গিয়ে যে কোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা এলাকাবাসীর। ভৈরব নদী খননের পর গত তিন বছরে ওই সাঁকোর আশপাশে কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চারটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু মেহেরপুর শহর থেকে উত্তরাঞ্চলের সাঁকোগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া সাঁকো। কিন্তু এলাকার সংসদ সদস্য ও এলজিইডি থেকে বারবার সেতুটি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ার পরও কোনো অজানা কারণে তা বাস্তবায়ন হয় না। বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষার সময় সাঁকো ডুবে গেলে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে কাথুলী ব্রিজ দিয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। তাতে খরচ বেশি হওয়াসহ পড়াশোনা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়। কুতুবপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক রেজাউর রহমান বলেন, দুই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। অথচ কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সাঁকো হলেও এই সাঁকোটি আজও হলো না।

জেলার কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান রানা বলেন, শত বছরের পুরাতন এই সাঁকোটিতে আজও ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ব্রিজটি নির্মাণ হলে দুই উপজেলার ১৫ গ্রামের মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন। ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি করে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ব্রিজ নির্মাণের। ব্রিজটি নির্মিত হলে শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়ন হবে। সেইসঙ্গে এ এলাকার জনগণের দুর্ভোগ কমবে।  মেহেরপুরের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ব্রিজ নির্মাণে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। তবে ত্রুটিযুক্ত হওয়ায় তা ফিরে এসেছে। আমরা আবার সংশোধন করে প্রস্তাবনাটি পাঠিয়ে দেব।

সর্বশেষ খবর