সোমবার, ১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

নিঃসন্তান হওয়ায় দুই শিশু চুরি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

নিঃসন্তান হওয়ায় দুই শিশু চুরি

নিঃসন্তান হওয়ায় প্রথমে ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সদর হাসপাতাল থেকে ২৩ দিনের শিশু চুরি করা হয়। বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে মারা যায়। এরপর সাকাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে আরেক নবজাতক চুরি করেন অভিযুক্ত আল্পনা খাতুন। সিরাজগঞ্জ সদর থানা ক্যাম্পাসে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সলঙ্গার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের আল্পনার সাত বছর আগে বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে সন্তান না হওয়া শুরু হয় পারিবারিক কলহ। এ জন্য আল্পনা বাচ্চা চুরির পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মতে নিজেকে গর্ভবতী পরিচয় দিয়ে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসা-যাওয়া শুরু করেন। সখ্য গড়ে তোলেন এক স্টাফের সঙ্গে। হাসপাতালের ওই স্টাফ শিশু চুরিতে সহায়তার আশ্বাস দেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি আল্পনা উল্লাপাড়ার বাদালিয়াকান্দি থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু মাহিমের মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

 মাহিমের মা আল্পনাকে ভরসা করে তার কাছে বাচ্চা রেখে বাইরে গেলে তিনি শিশুটি নিয়ে পালিয়ে যান। ২৪ তারিখ শিশুটি অসুস্থ হলে পড়ে। ২৭ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হলে লাশ ঘরে ধানের গোলায় লুকিয়ে রাখেন। এরপর আল্পনা আরেকটি বাচ্চা চুরির জন্য হাটিকুমরুলের সাকাওয়াত এইচ হাসপাতালে যান। সেখানে সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশুর নানির সঙ্গে সখ্য গড়ে শিশুটি কোলে নেন আল্পনা। কিছুক্ষণ পর কৌশলে নানিকে কেবিনের ভিতর পাঠিয়ে বাচ্চাটি নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান। দুই শিশু চুরির খবর পেয়ে পুলিশ, র‌্যাব ও পিবিআই মাঠে নামে। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে আল্পনার বাবার বাড়ি অভিযান চালিয়ে এক শিশুকে শনিবার রাতে জীবিত উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সদর হাসপাতাল থেকে বাচ্চা চুরির কথাও স্বীকার করেন আল্পনা। তার দেওয়া তথ্যে ধানের গোলা থেকে শিশু ফাহিমের লাশ উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় আল্পনা, তার মা ছায়রন, ভাই রবিউল, ভাইয়ের স্ত্রী মায়া, চাচি মিনা ও চিকিৎসক শরিফুলকে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, আল্পনাকে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের আটকেও অভিযান চলছে। এ ঘটনায় সলঙ্গা ও সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর