পঞ্চগড়ে নির্মাণের পরের দিন থেকে ভাঙতে শুরু করেছে একটি সড়ক। সড়কটিতে ঢালাই দেওয়া পিচ উঠে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ওই সড়কটিতে ভেঙে পড়া অংশগুলোকে জোড়া তালি দিয়ে পুনরায় সংস্কার করা হচ্ছে। সদর উপজেলার মিলন বাজার থেকে ব্যারিস্টার বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটারের দীর্ঘ সড়কের বেহাল অবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে জোর করে ট্রাক দিয়ে বালি পরিবহনের কারণে সড়কটি ভাঙতে শুরু করেছে। এ সড়কের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এ কারণে সড়কটির এমন অবস্থা। এলজিইডির মতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা জোর করেই নির্মাণ চলাকালে বড় ট্রাক দিয়ে বালি পরিবহন করেছেন। তাই সড়কটি ভাঙছে। সূত্র মতে ২০১৯ সালে ১৯ ডিসেম্বর সরকারের গ্রামীণ সড়ক মেরামত প্রকল্পের আওতায় সড়কটি নির্মাণ কাজের দরপত্র চূড়ান্ত করা হয়। প্রভাবশালী এক ঠিকাদার কাজের দায়িত্ব পান। ২০২০ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ করতে না পেরে ঠিকাদার ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্মাণের কাজ শেষ করেন তিনি। কিন্তু ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকেই সড়কটি ভাঙতে শুরু করে। পরে সেসব স্থানে বালি এবং আলকাতরা দিয়ে পুনরায় সংস্কার করা হয়। সড়কটির অনেক স্থানে প্যারাসাইলিংয়ের জন্য ইট ব্যবহার করা হয়নি। নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন সড়কটি যে কোনো সময় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়বে। লাঠুয়াপাড়া গ্রামের রইসউদ্দিন জানান এই সড়ক দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চলাচলে অনেক কষ্ট হচ্ছিল। আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে গত দুই বছর আগে সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মাত্র চার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে প্রায় তিন বছর লাগল। আমাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এখন আবার সমস্যা। বিটুমিন পিচ উঠে যাচ্ছে। আবার আমাদের দুর্ভোগে পড়তে হবে। সরকার আন্তরিক হলেও ঠিকাদার এবং কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে এই অবস্থা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সদর উপজেলা প্রকৌশলী আতাউর রহমান জানান, সড়ক নির্মাণের একদিনের মধ্যে ভেঙে পড়ার জন্য স্থানীয় বালি পাথর ব্যবসায়ীরা দায়ী। তাদেরকে বার বার অনুরোধ করার পরেও ওই সড়ক দিয়ে ১০ চাকার ট্রাক দিয়ে বালি পরিবহন করছেন। এমনকি নির্মাণ কাজ চলার সময়ও তারা ট্রাকে করে বালি পাথর পরিবহন করেছেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তারা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।