বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

লালমনিরহাটে অবরুদ্ধ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটে অবরুদ্ধ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

লালমনিরহাটে অসহায় শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার তিন পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এমন কি বসতবাড়ির গাছপালা কেটে ফেলে বাঁশের বেড়া দিয়ে ৪০ দিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নিরীহ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তিন পরিবার। এ ঘটনায় হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য’র কাছে বিচারের দাবি করেন অসহায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মিজানুর রহমান। সরজমিনে দেখা যায়, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের চর ঠ্যাংঝাড়া গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নায়েক মজিবর রহমানের ছেলে মো. মিজানুর রহমান ও তার মৃত ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল ও মোশারফের ৩০ শতক জমির বসতবাড়ির বিভিন্ন প্রকারের গাছপালা কেটে ফেলে। চলাচলের একটু জায়গা দিয়ে তিন বাড়ির চার দিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে অবরুদ্ধ করে রাখেন প্রতিপক্ষ শহিদুল ইসলামের লোকজন। এতে অসহায় ভূমিহীন পরিবারটি চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। জানা গেছে, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের চর ঠ্যাংঝাড়া গ্রামে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নায়েক মজিবর রহমানের ছেলে মো. মিজানুর রহমানসহ তিন ভাইয়ের নামে তফসীলের বসতবাড়ির ৩০ শত জমিতে ১৯৬৬ সাল থেকে ওই জমিতে বিভিন্ন গাছপালা লাগিয়ে বসবাস করছেন। একই গ্রামের প্রতিপক্ষ মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০) শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বসতবাড়ির ৩০ শতক জমি পিতার সম্পত্তি দাবি করে তার দলবল নিয়ে গত ২২ জানুয়ারি গাছপালা কেটে বসতবাড়ির চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলে। এতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তিন পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

বাঁধা দিতে চাইলে ওই অসহায় পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেন শহিদুলের লোকজন। এ ঘটনায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নায়েক মজিবর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (৬৪) হাতীবান্ধা থানায় ৮ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান বলেন, আমিসহ আমার তিন ভাইয়ের নামে রেকর্ডকৃত বসতবাড়ির ৩০ শতক জমিতে ১৯৬৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছি। প্রতিপক্ষ শহিদুল ইসলামের লোকজন জমিতে থাকা গাছপালা কেটে ফেলে বাড়ির চতুর্দিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখে আমাদের তিন পরিবারকে গৃহবন্দী করে রখেছেন। এসময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি ও আমার পরিবারের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি যখন তখন আমাদের মেরে ফেলে ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে উচ্ছেদ করতে পারে। ভুক্তভোগী মিজানুর রহমানের স্ত্রী শিরিনা খাতুন বলেন, গত দুই বছর ধরে আমাদের লাগানো ১৩টি গাছ কেটে নিয়ে গেছে, পুকুরে মাছ ধরে নিয়ে গেছে, ল্যাট্রিন ভেঙে দিয়েছে আমরা কিছুই বলিনি। এখন তাদের অত্যাচারে কিভাবে আমরা টিকে থাকি। আমরা আতঙ্কে আছি। তাদের ভয়ে আমরা কিছুই বলতে পারছি না। অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বাবা মৃত আব্দুল কাদের নামে ৬২ সালের রেকর্ড অনুযায়ী আমরা এই জমির মালিক। বিষয়টি নিয়ে আমরাও থানায় অভিযোগ করছি। দুই পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হলে সমাধান হবে। হাতীবান্ধা থানার অভিযোগ তদন্তকারী উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে থানায় ডাকলে এক পক্ষ না আসায় মামলাটি জমি সংক্রান্ত হওয়ায় আদালতে পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর