শনিবার, ৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

গড়াই তীরে সবুজ হৃদপিণ্ড

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

গড়াই তীরে সবুজ হৃদপিণ্ড

ইট-পাথর আর লোহা-লক্কড়ের শহরে বুকভরে শ্বাস নেওয়ার মতো নির্মল বাতাস অনেকটাই দু®প্রাপ্য। প্রায় ৪০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের কুষ্টিয়া শহরে একের পর এক মাথা তুলছে বহুতল ভবন। এতে দিন দিন কমছে শহরের ফাঁকা জায়গা আর সবুজ গাছ-গাছালি। শহুরে মানুষের যেন দমবন্ধ হওয়ার জোগাড়। তাই শহরবাসীকে একটু দম ফেলার ফুসরত দিতে বড় বাজার এলাকায় গড়াই তীরে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ তৈরি করছে একটি পার্ক। পার্ক নাম হলেও এটি মূলত হবে উদ্যান। এটি শহরের ‘হৃদপিণ্ড’ হবে বলে মনে করছেন সবাই। জেলা পরিষদ সূত্র জানিয়েছে, পরিবেশের কথা বিবেচনা করে স্থানীয় এমপি একটি দৃষ্টিনন্দন উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনার আলোকে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদ বড়বাজার এলাকায় গড়াই নদীর তীরে জায়গা নির্ধারণ করে। সেখানে বালু ভরাটের পর প্রায় ২০ একর জায়গাজুড়ে প্রাচীর দেওয়া হয়। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্যানটির জন্য নকশা তৈরি করা হয়। সরেজমিন দেখা গেছে, গড়াই নদীর তীর ঘেঁষেই পুরোদমে চলছে পার্কটির নির্মাণকাজ। বাইরে নদীপাড়ে লাগানো হয়েছে আমগাছ। এ ছাড়া চারপাশে রোপণ করা হয়েছে নারিকেল গাছের চারা। ভিতরে একাধিক স্থানে পাকা দৃষ্টিনন্দন গোলচত্বর তৈরি করা হয়েছে। আলাদা আলাদা গোলচত্বরে লাগানো হচ্ছে আদালা আলাদা প্রজাতির গাছ। এরই মধ্যে ইট-পাথরের ঢালাইয়ের গোলচত্বরে রোপণ করা হয়েছে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির বৃক্ষ ও ফুলের গাছ। মানুষের চিত্তাকর্ষণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের জন্য এ পার্কটি বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন। কারণ, জগিংয়ের জন্য পার্কজুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে কংক্রিটের পথ। এ ছাড়া ভিতরে বিভিন্ন স্থানে থাকবে বেঞ্চ। পার্কের দক্ষিণ অংশে মূল প্রবেশ পথ। এ পথে প্রবেশের জন্য ৭২ ফুট চওড়া সড়ক তৈরির কাজ চলছে। আর গড়াই নদীর ধার দিয়ে রয়েছে ২০ ফুট চওড়া সড়ক। বছরজুড়ে নদী ভ্রমণের জন্য থাকবে বোটের ব্যবস্থা। এমনকি পাখিদের জন্য অভয়াশ্রম হিসেবে পার্কটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘পার্কে (উদ্যানে) ইতিমধ্যে ৬ হাজার বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অর্ধলক্ষাধিক দেশি-বিদেশি নানা জাতের গাছের চারা রোপণ করা হবে। পাশাপাশি ফুলের চারা রোপণ করা হচ্ছে। নদী তীরে লাগানো হয়েছে নানা জাতের আমের গাছ।

সেগুলো বড় হয়েছে।’ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পার্কটি মূলত উদ্যান। এ পার্ক নিয়ে তাদের কোনো বাণিজ্যিক চিন্তা-ভাবনা নেই। মূলত সবুজ একটি পার্ক নির্মাণ করতেই স্থানীয় এমপির পরিকল্পনায় আমরা এটা বাস্তবায়ন করছি। পার্কটি স্থাপনে প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। ইতিমধ্যে ৬ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। পার্কটির পূর্ণরূপ পেতে আরও কয়েক বছর সময় লাগবে। এরপর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। পরিপূর্ণতা পেলে মনে হবে শহরের বুকে একখ  সবুজ নগরী। আকর্ষিত হবে যে কেউ। তিনি বলেন, ‘জেলায় এমন কোনো পার্ক নেই। তাই উদ্যানের আলোকে আমরা পার্ককে সাজাচ্ছি। বহু ধরনের বৃক্ষের পাশাপাশি ফুল ও ফলের গাছ থাকবে। পুরো এলাকা সবুজে সবুজে ভরে তোলা হবে। উন্নত দেশগুলোর পার্কের চেয়েও মনোমুগ্ধকর করে সাজানো হবে। মনে হবে শহরের পাশে একখ  সবুজ হৃদপি ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর