রবিবার, ৭ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ধুলোর শহর পঞ্চগড়

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

ধুলোর শহর পঞ্চগড়

শহরে প্রবেশ করলেই এক অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশের মুখোমুখি হতে হচ্ছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের নাগরিকদের। দেশ বিদেশের পর্যটকরাও বিব্রত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। শহরে উড়ছে ধুলোবালির কণা। চোখে দেখা না গেলেও শহরে প্রবেশ করলেই মুহূর্তেই নাক মুখ দিয়ে প্রবেশ করছে ধুলোবালি। চোখে পড়ছে। বাড়িতে ফিরলেই দেখা যায় ধুলোর আস্তরনে চুল সাদা হয়ে গেছে। নাগরিকরা বলছেন শহরটি এখন ধুলির শহরে পরিণত হয়ে গেছে। অজান্তেই এসব ধুলোবালি ঢুকে পড়ছে শরীরে। বাড়ছে ধুলোবালি সংক্রান্ত রোগ। ধুলোবালির কারণে বাতাস দূষিত হয়ে পড়েছে। বায়ু দূষণের ফলে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা, হাঁপানি, চোখের সমস্যা, ব্রংকাইটিস, সর্দি, কাশিসহ ছড়িয়ে পড়ছে ফুসফুসে ক্যান্সারের মতো রোগ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন জেলার বেশ কয়েকটি নদী থেকে বালি ও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর বাংলাবান্ধায় আমদানি হচ্ছে পাথর। এসব বালি পাথর ট্রাকের মাধ্যমে সারা দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

 সারা দেশের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি শহরের উপর দিয়ে নির্মিত। প্রতিদিন অন্তত এক হাজার পাথর বালি ট্রাক তাই শহরের উপর দিয়েই চলাচল করে। অন্যদিকে ট্রলিসহ অন্যান্য পরিবহনেও নানা বালি, পাথর, ইট পরিবহন করা হয়। এসব পরিবহন থেকে প্রতিনিয়ত ধুলোবালি ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ শহরের রাস্তার দুই পাশে কয়েক ফিট রাস্তা ইট ও বালু বিছিয়ে প্রশস্ত করেছে। এ কারণে কয়েক হাজার টন বালি ফেলা হয়েছে শহরে। বর্তমানে শহরে ধুলোবালি। এছাড়াও বিভিন্ন নির্মাণ কাজের কারণেও ছড়িয়ে পড়ছে ধুলোবালি। রাস্তার দুই পাশে অবস্থিত খাবারের দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা জিনিসপত্রের উপরে পড়ছে ধুলির আস্তরণ। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও  ঢুকে পড়ছে এসব ধুলোবালি। অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ছে পরিবেশ। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে পৌরবাসী। ধুলা দূষণের কারণে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।  প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা কারিগরের পরিবেশ বিষয়ক সমন্বয়ক বদিউজ্জামান মিলন জানান, শহরে ঢুকলেই নিজেদের অজান্তে লক্ষকোটি ধুলিকণা প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরের প্রবেশ করছে। শান্ত শহরটি দিন দিন অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। জরুরিভিত্তিতে ধুলোবালি অপসারণ করা দরকার। না হলে অচিরেই মহামাীর আকারে ধুলোবালিজনিত রোগ ছড়িয়ে পড়বে।  সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান বলছেন পঞ্চগড়ে ধুলোবালিজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ধুলোবালির কারণে আ্যজমা ও শ্বাসকষ্ট ছড়িয়ে পড়ছে। শহরে ধুলোবালির প্রভাবে বায়ু দূষিত হয়ে পড়ছে। পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন জানান, শহরকে ধুলোবালি মুক্ত করার জন্য পানি দেওয়া হচ্ছে। ধুলোবালি সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অপরিকল্পিতভাবে ইট বালির রাস্তা নির্মাণের ফলে ধুলোবালি  বেড়ে গেছে। বায়ু দূষণ বেড়ে গেছে। আমরা এখন এসব বালি সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে শহরটি ধুলোবালি মুক্ত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর