মেহেরপুর ইটভাটা মালিকদের জিম্মি করে অর্থবাণিজ্যসহ হয়রানির অভিযোগ উঠেছে সরকারি এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এসবের প্রতিবাদ করলেই ইটের ট্রলি আটক করে দিনের পর দিন ফেলে রাখা হচ্ছে। আবার ওই কর্মকর্তার যোগসাজশে ভ্যাট বকেয়া রেখেও দিনের পর দিন ব্যবসা করছেন অনেকে।

মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইটভাটা মালিক আবদুর রাজ্জাক জানান, ২০০৪ সালের মৌসুমি ইটভাটা বিধিমালার রাজস্ব বোর্ড গেজেটে ভাটা মালিকদের প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বর প্রথম কিস্তির ৩৫ শতাংশ, ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কিস্তির ৩৫ শতাংশ ও ৩১ মার্চের মধ্যে অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধের নিয়ম আছে। সে নিয়ম না মেনে ইটের গাড়ি আটক করে পূর্ণাঙ্গ ভ্যাট আদায় করছেন মেহেরপুরের কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে।

সেক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি লাগছে না। গাংনী উপজেলা যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার মজিরুল ইসলাম বলেন, অন্য ঠিকাদারের মতো আমিও ইটের মূল্য কম থাকার সময়ে বিভিন্ন ভাটা থেকে ইট কিনে মজুত রেখেছি। পরে আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন মতো ইট নিজস্ব পরিবহনে সরকারি রাস্তা, স্কুল-কলেজ ভবন ও ব্রিজ নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছেন। গত বৃহস্পতিবার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তা তপন চন্দ্র ট্রলি আটক করে গাংনী থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। মজিরুল ইসলামের অভিযোগ, অনেকে ইটভাটার ভ্যাট পরিশোধ না করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। গাংনী বামুন্দী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের সততা ইটভাটা মালিক ইছার উদ্দীন জানান, তার ভাটা ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য নিশিপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের কাছে লিজ দেওয়া হয়। তিন বছর ইটভাটা চললেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভাটা বন্ধ রয়েছে মর্মে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিস প্রত্যায়ন দিয়েছে। ভাটা বন্ধের প্রত্যায়ন দিয়ে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য হয়েছে। গাংনী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন, গত বছর গাংনীতে ৫৪টি ইটভাটা চললেও মাত্র ২৭টি ভ্যাট দিয়েছে। বাকি ভাটা থেকে ভ্যাট না নিয়ে অর্থবাণিজ্য করছেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে মেহেরপুরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাটের বিভাগীয় কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে বলেন, অফিসে আসুন কথা হবে। গত বৃহস্পতিবার উনার অফিসে গিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করবেন না বলে জানান।