রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ঝালকাঠিতে বিলীনের পথে শঙ্খশিল্প

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠিতে বিলীনের পথে শঙ্খশিল্প

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঝালকাঠির শঙ্খ শিল্প। এক সময় ঝালকাঠি শহরে অনেক শাখা শঙ্খের দোকান ছিল। এখন মাত্র চারটি দোকান আছে। শঙ্খ শিল্পের কারিগররা পেশা পরিবর্তন করে চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ও ভ্যাট দিয়ে তাদের যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না। সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই সম্ভাবনাময় এ শিল্প বিলীন হবে ঝালকাঠি থেকে। তবে বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা যদি ঋণ নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চায় তাহলে তাদের সহযোগিতা করা হবে। এক সময় শঙ্খ শিল্পের জমজমাট বাজার ছিল ঝালকাঠি শহরে। ২২টি শঙ্খ বণিক পরিবারের মালিকানাধীন দোকান ছিল ২০-২৫টি। জেলার বাইেন্ডের থেকেও অনেকে আসতেন এখানে শাঁখার তৈরি বিভিন্ন অলংকার কিনতে। কিন্তু সে অবস্থা এখন আর নেই। শঙ্খ শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার। বাকি পরিবারের সদস্যরা অন্যন্য পেশায় চলে গেছে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এ পেশা। ঝালকাঠি শহরে এখন মাত্র চারটি শঙ্খের দোকান আছে।

 শঙ্খ শিল্পের কারিগররা জানান, আগে শ্রীলংকা থেকে তাদের কাঁচামাল আসত। এখন আসে ভারত থেকে। এ কারণে ভ্যাট মিলিয়ে তাদের কাঁচামাল সংগ্রহের খরচ বেড়ে যায়। এ ছাড়া তারা কোনো ঋণও পাচ্ছেন না। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতাকারী প্রতিষ্ঠান বিসিকের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। যদিও  বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছেন শঙ্খ শিল্পিরা তাদের প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত নয়। তবে তারা ইচ্ছে করলে নিবন্ধিত হয়ে ঋণ চাইতে পারেন। কারিগররা জানান, প্রতি জোড়া শাখার চুরি তারা ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। স্বর্ণের প্রলেপ দিয়ে যেটা ডিজাইন করা হয় সেটির মূল্য নেন ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। তাদের সংগ্রহ করা ১ কেজি কাচাঁমালের দাম পড়ে ২৫০ টাকা। এ ছাড়া ডিজাইন করা কাঁচামালের মূল্য প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা। কাঁচামালের দাম বেশি হওয়ায় তারা লাভ করতে পারছেন না। তবে এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা মনে করেন, তারা যদি কম মূল্যে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারেন এবং সহজ শর্তে ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের ঋণ পান, তাহলে তারা আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। 

সর্বশেষ খবর