চিকিৎসক সংকট, অপারেশন থিয়েটার বন্ধ, নষ্ট আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ফিল্মের অভাবে বন্ধ এক্স-রে। ফলে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ছাড়া পরীক্ষা নিরীক্ষার সীমাবদ্ধতায় রোগীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে। তাই ফাঁকা পড়ে আছে পুরুষ ওয়ার্ডের বেশির ভাগ বিছানা। নারী রোগীদের বেশিরভাগ বিছানায় শিশু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। আধুনিক ভবনে চারদিকে নিস্তব্ধতা যেন বাসা বেঁধেছে। সরেজমিন এমনই চিত্র দেখা গেছে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে যে তালিকা পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের পদ আছে ৯টি। যার ৬টিই এখন শূন্য। জুনিয়র কনসালটেন্ট , জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), কনসালটেন্ট (মেডিসিন), কনসালটেন্ট (শিশু), আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসারের পদে ডাক্তার না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চিকিৎসা সেবার কাজ। ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু জনবল, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, অর্থ সে অনুপাতে বাড়ানো হয়নি। ভবন নতুন হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে ধুলোবালিতে ছেয়ে আছে মেঝে ও সিঁড়ি। রাতে মশার উপদ্রব হলেও রোগীদের দেওয়া হয় না মশারি। খাবারের মানও ভালো নয়।
নারী ওয়ার্ডের নম্বরবিহীন বিছানায় ভর্তি সাহারবাজার গ্রামের রোকেয়া (৫৮) বলেন, ‘বুকের ব্যথা ও ডায়াবেটিস সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছি। একজন ডাক্তার সকাল বেলা আসেন। দুই একটা ওষুধ হাসপাতাল দেয় বাদ বাকি বাহির থেকে কিনতে হয়েছে।’ পুরুষ ওয়ার্ডের ৯ নং বিছানার রোগী খায়রুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতাল থাকি দুইটা ইনজেকশন দিচ্ছে। বাকি ওষুধ দোকান থাকি কিনছম।’ এক্স-রে বাইর থেকে করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুরঞ্জন কুমার সরকার বলেন, চিকিৎসক কম থাকলেও আমরা সাধ্যমতো সেবা দিচ্ছি। পুরুষ বিভাগে কম রোগী থাকলেও নারী ওয়ার্ডে মেঝেতেও রোগী আছেন। প্রতিদিন আউটডোরে গড়ে ২০০ রোগী আসেন বলে তিনি দাবি করেন। ময়লা পরিবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতিদিন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পরিষ্কার করার কাজ করেন কিন্তু রোগী ও তাদের স্বজনরা ময়লা করে ফেলে। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন এখানে নেই তাই ফিল্মের অভাবে এক্স-রে হচ্ছে না। অফিস সময়ের বাইরে রক্ত,কফ ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয় না।