শুক্রবার, ২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর

ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা

মাটির পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা -বাংলাদেশ প্রতিনিধি

এক সময়ে গ্রামের মানুষ মাটির তৈরি হাঁড়ি, বাসন, কলস, বদনা, মুড়ি ভাজার খোলাসহ বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার করতেন গৃহস্থালির কাজে। এসব পণ্য সুনিপুণ হাতে তৈরি হতো কুমারপল্লীতে। কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির তৈরি এসব পণ্য। এখন মৃতশিল্পীদের কাজ ফুলের টব, দইয়ের পাতিল আর কিছু দেবদেবীর মূর্তি বানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। তার পরও যারা এখনো এ পেশার সঙ্গে রয়েছেন তাদের মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাস। সব মিলিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন শেরপুরের কুমার সম্প্রদায়ের লোকজন। জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের পালপাড়া, বাহারির পাড়া, চেঙ্গুরিয়া এবং ঝিনাইগাতির চাপাঝোড়ায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ এখনো মৃতশিল্পের সঙ্গে আছেন। প্রথা অনুসারে প্রতি বছর বৈশাখ মাসে এই পেশার উৎপাদন কাজ বন্ধ থাকে। তবে কুমারদের বানানো কিছু জিনিসপত্র ক্রয় করা বাঙালি সংস্কৃতির অংশ। গত বৈশাখে করোনার কারণে লকডাউন থাকায় বেচাবিক্রি এক প্রকার বন্ধ ছিল। গতবারের মালপত্রই বিক্রি হয়নি। এর মধ্যে আসছে বৈশাখের জন্য মালামাল তৈরি করা হচ্ছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। ফলে বানানো জিনিসপত্র বিক্রি করতে না পারলে মাঠে মারা পড়বেন বলে জানিয়েছেন কুমার সম্প্রদায়ের লোকজন। পালপাড়ার কুমার আলো রানী পাল, মদন পাল, দীপেন চন্দ্র পাল বলেন, এই শিল্পের কদর আগের মতো আর নেই। অনেকেই পেশা বদল করেছেন। এখন বাজারে হাতেগোনা কয়েকটি পণ্য চলে। তবে গত বছর করোনায় সব বন্ধ থাকায় বিক্রি হয়নি কিছুই। বৈশাখ মাসকে কেন্দ্র করে মোটামুটি ব্যস্ত সময় পার করছি। আবারও করোনায় লকডাউন হলে পথে বসার জোগাড় হবে। কুমারদের দাবি, গত বছর করোনায় দুই-চারজন ১০ কেজি সরকারি চাল পেয়েছেন। দুই হাজার ৫০০ করে টাকা দেওয়ার তালিকা জনপ্রতিনিধি ও নেতারা করেছিলেন কিন্তু পরে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউএনও ফিরোজ আল মামুন জানান, শিগগিরই কুমার সম্প্রদায়ের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সরকারি সহযোগিতা করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর