মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাইকে ফাঁসাতে শিশু কন্যাকে হত্যা করল বাবা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় চার মাসের কন্যাসন্তান নুপুরকে পুকুরে ফেলে হত্যা করলেন পাষন্ড বাবা মজিদ মোল্লা (৩৫)। নৃশংস এ ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার রাতে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামে। বড় ভাইকে ফাঁসাতে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানা গেছে। পুলিশ ঘাতক মজিদকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় স্ত্রী মারুফা বেগম বাদী হয়ে সন্তান হত্যার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ জানায়, মৃত লতিফ মোল্লার ছেলে মজিদ মোল্লা দিনমজুরির কাজ করেন। নিজের কোনো জমি না থাকায় স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে একই গ্রামের নূর জাহান বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকেন তারা। সংসারে অভাবের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকত সবসময়। পাশাপাশি ১৫ কাঠা শরিকি সম্পত্তি নিয়ে বড় ভাই রশিদ মোল্লার সঙ্গে বিরোধ চলছে তার।

সেই বিরোধের সূত্র ধরে নিজের অবুঝ সন্তানকে বড় ভাইয়ের পুকুরে ফেলে দিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন ঘাতক মজিদ। মামলার বাদী স্ত্রী মারুফা বেগম বলেন, গত ৩০ মার্চ স্বামী মজিদ মোল্লা এবং ভাসুর রশিদ মোল্লার মধ্যে জমির বিরোধ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর পর থেকে সে (স্বামী) আনমোনা হয়ে চলাফেরা করতে থাকে। ঘটনার দিন রাতে মাটিকাটার কাজ শেষে স্বামী বাড়িতে এসে ছেলে নয়নকে (৯) সঙ্গে দিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাকে স্থানীয় তাফালবাড়ী বাজারে ওষুধ কিনতে পাঠায়। এ সময় মেজো মেয়ে নবীছা (৬) ও চার মাসের নূপুরকে স্বামীর কাছে রেখে যাই। সেই ফাঁকে মেজো মেয়েকে এক প্রতিবেশীর বাসায় রেখে নূপুরকে নিয়ে ভাসুর রশিদ মোল্লার পুকুরে ফেলে দিয়ে আবার বাসায় চলে এসে চুপচাপ থাকে।  স্ত্রী মারুফা বেগম জানান, পরে ওষুধ নিয়ে এসে নূপুরকে না পেয়ে জানতে চাইলে স্বামী অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে বলেন, নূপুরকে নিয়ে বড়ভাই রশিদের বাড়িতে গেলে অন্ধকারে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মেয়েটি পুকুরে পড়ে গেছে। একথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে গিয়ে সেই পুকুর থেকে ভসমান অবস্থায় মেয়েকে উদ্ধার করে শরণখোলা হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে ভাসুর আ. রশিদ মোল্লা বলেন, আমাকে ফাঁসাতেই নিজের মেয়েকে আমার পুকুরে ফেলে রেখে যায়। কিন্তু পুলিশ তার কথা শুনে আসল ঘটনা বুঝতে পারে। প্রতিবশেী আনোয়ার হাওলাদার বলেন, বড় ভাইয়ের সঙ্গে মজিদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে শুনেছি। সে কারণে ভাইকে ফাঁসাতে এ ন্যক্কারজনক কাজ করেছে। মজিদের আগে থেকেই স্বভাব-চরিত্র খারাপ। শরণখোলা থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান বলেন, মজিদকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে নূপুরকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

সর্বশেষ খবর