শিরোনাম
শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

গলার কাঁটা ২২ কিলোমিটার সড়ক

দুর্ভোগে লাখ লাখ মানুষ, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

গলার কাঁটা ২২ কিলোমিটার সড়ক

দীর্ঘদিনেও সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় খানাখন্দ আর ধুলাবালিতে একাকার রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ সড়ক

গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে নওগাঁর রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের ২২ কিলোমিটার সড়ক। দীর্ঘদিনেও নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে এলাকাবাসী। এ সড়কে কার্পেটিং তুলে ফেলায় খানাখন্দ ও ধুলাবালিতে একাকার হওয়ায় দুর্ভোগে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে সড়কটির কাজ দীর্ঘদিনেও শেষ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শ্রেণি পেশার মানুষ। জানা যায়, রানীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কটি এলজিইডির আওতায়। সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল এবং মানুষের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এলজিইডি থেকে সড়ক জনপথ বিভাগে হস্তান্তর করা হয় সড়কটি। বেহাল এ সড়কের রাণীনগর সদর থেকে আবাদপুকুর-কালীগঞ্জের মধ্যদিয়ে নাটোরের সিংড়ার-রাজশাহী মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সড়কটি প্রশস্ত এবং পাকাকরণের জন্য বিগত ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সড়কটিতে ২৬ কালভার্ট ও ৪টি সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। সড়ক, কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে সময় দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা একের পর এক অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করতে থাকেন। স্থানীয়রা বলছেন, সড়কের কেবলমাত্র কার্পেটিং তুলে রোলার চালিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন অবস্থায় পরে থাকায় সড়ক জুড়ে ছোট বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন তারা। এছাড়া দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কালভার্ট এবং সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। অধিকাংশ সেতু-কালভার্ট ভেঙে কাজ না করেই ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে পার্শ্বে সড়ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক কাজ বন্ধ থাকায় হতাশায় পড়েছেন এলাকাবাসী। পথচারী ও যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এ ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ভারী মালামাল পরিবহন, জরুরি রোগী নিয়ে সড়কে চলাচল করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। যানবাহন চালকরা বলেন, যাত্রীরা সড়কে ধুলাবালি ও খানাখন্দের দুর্ভোগের কারণে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে চায় না। রাণীনগর থেকে আবাদপুকুর পর্যন্ত যেতে আগে সময় লাগত ১০ মিনিট এখন সড়কের এমন বেহালের কারণে যেতে সময় লাগছে ৩০ মিনিট। রাণীনগর থেকে কালীগঞ্জ যেতে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। এ সড়কটিকে ঘিরে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ চালু করেন। আবার কাজ বন্ধ রেখে আবার চলে যান। যেন দেখার কেউ নেই। এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, জনস্বার্থে দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের অবগত করা হয়েছে। নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। দ্রুত এ সড়কের কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বার বার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। যদি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে তাহলে তার চুক্তিনামা বাতিল করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর