রবিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়ার প্রকোপ

হাসপাতালে ভিড়, সেবা দিতে হিমশিম

প্রতিদিন ডেস্ক

বিভিন্ন স্থানে ডায়রিয়ার প্রকোপ

বাগেরহাটের শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ডায়রিয়া আক্রান্তরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাগেরহাটের শরণখোলা, ঝালকাঠি ও বরগুনার পাথরঘাটায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এসব এলাকায় হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভিড়। সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। প্রতিনিধিদের খবর-

বাগেরহাট : শরণখোলা উপজেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে গতকাল পর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শিশুসহ শতাধিক ব্যক্তি। শনিবার দুপুর নাগাদ ৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। জানা যায়, শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ইউনিটে শয্যা কম থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে মেঝেতে রেখে। অনেকে হাসপাতালের বেড না পেয়ে বাড়িতে থেকে পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে  সেবা নিচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসক ও স্থানীয়রা জানান, উপকূলীয় এলাকা শরণখোলায় নেই কোনো গভীর নলকূপ। নদী ও পুকুরের পানি পান করে তৃষ্ণা মেটান এখানকার বাসিন্দারা। এ কারণেই পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অধিকাংশই উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজার, কদমতলা, ঝিলবুনিয়া, পূর্ব খাদা, আমরাগাছিয়া, রাজাপুর ও খোন্তাকাটা এলাকার। এ সব এলাকায় বর্তমানে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট চলছে। শরণখোলার রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, পানি সংকট সমাধানে কিছু পুকুর খনন ও পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার পানির সমস্যা সমাধানের জন্য টেকসই উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। শরণখোলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদা ইয়াছমিন জানান, এ উপজেলা এমনিতেই লবণাক্ত এলাকা। এর মধ্যে চৈত্র-বৈশাখ মাসে পুকুরগুলোর পানি তলদেশে নেমে যায়। যে কারণে বাধ্য হয়ে মানুষ ওই দূষিত পানি পান করছে। ডায়রিয়া যেহেতু পনিবাহিত রোগ, তাই বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। শরণখোলার ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, বিশুদ্ধ পানির সংকট সমাধানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা ও রোগ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ঝালকাঠি : জেলায় হঠাৎ করে বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় রোগীদের হাসপাতালের বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৪০ জন ডায়রিয়া রোগী সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছেন ৪ শতাধিক রোগী। পাথরঘাটা : বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলায় দিন দিন বেড়ে চলেছে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে রেকর্ড সংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। নারী-শিশুসহ প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে সিট খালি না থাকায় বারান্দা ও করিডরে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। পর্যাপ্ত স্যালাইন না থাকায় বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার আবুল ফাতাহ জানান, দশ দিন আগে কলেরাস্যালাইনের জন্য চাহিদা পাঠিয়েছে। আশা করি আগামী সপ্তাহে এক হাজার স্যালাইন আসবে।

সর্বশেষ খবর