শনিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

পরিত্যক্ত কলাগাছ থেকে তৈরি হচ্ছে সুতা, বর্জ্য থেকে সার

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

পরিত্যক্ত কলাগাছ থেকে তৈরি হচ্ছে সুতা, বর্জ্য থেকে সার

পরিত্যক্ত কলাগাছই স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাড়তি আয়ের। ফল পাওয়ার পর ফেলে দেওয়া কলাগাছ থেকে তৈরি হবে সুতা। এই সুতা ব্যবহার হবে হস্তশিল্পে। এসব পণ্য রপ্তানি করে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা। পাশাপাশি কর্মসংস্থানেরও পথ সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানানো হয়, কলার জন্য বিখ্যাত এ জেলার শুধু শিবগঞ্জ উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার লোক কলা চাষ করেন। চাষিরা বাগান হতে কলা কাটার পর গাছ যত্রতত্র ফেলে দিত। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কলা গাছ পচে দূষণ হতো পরিবেশ। পরিত্যক্ত এসব কলাগাছের বাকল থেকে আঁশ সংগ্রহ করছেন শিবগঞ্জের অর্জুনপুর গ্রামের উদ্যোক্তা বকুল হোসেন। বাকল থেকে ফাইবার বা আঁশ পাওয়ার পর অবশিষ্ট বর্জ্য থেকে তৈরি হবে ভার্মি কমপোস্ট। এতে পরিত্যক্ত কলাগাছ যেমন কাজে লাগানো হচ্ছে তেমনি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বকুল হোসেনের পরিবারের সদস্যসহ বেকার নারী-পুরুষরা তার প্লান্টে কাজ করছেন। একটি কলাগাছ থেকে ৪০০ গ্রাম ফাইবার তৈরি হয়। এ ফাইবার প্রক্রিয়াজাত করে সুতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব হস্তশিল্প পণ্য। ৯০ টাকা খরচে উৎপাদিত প্রতি কেজি ফাইবার বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

পাশাপাশি স্বল্প খরচে একটি রিংয়ের মধ্যে ২১ দিনে বর্জ থেকে গোবর ও কেঁচোর সাহায্যে তৈরি হচ্ছে ভার্মি কমপোস্ট। শিবগঞ্জে দুটি মেশিনে কলাগাছ থেকে ফাইবার উৎপাদন করা হচ্ছে। মেশিন থেকে পাওয়া ফাইবার পানিতে ধোয়ার পর তা রোদে শুকানো হচ্ছে। এরপর প্রক্রিয়াজাত করে উৎপাদন করা হয় সুতা। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. ফজলে রাবিক্ষ ছাদেক আহমেদ জানান, প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হস্তশিল্প পণ্যের চাহিদা রয়েছে দেশে-বিদেশে। ভবিষ্যতে এর আরও বড় বাজার তৈরি হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় সারা বছর ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়। এর মধ্যে বেশি কলা আবাদ হয় শিবগঞ্জে। কলা কাটার পর পরিত্যক্ত গাছ থেকে ফাইবার তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান হবে বেকারদের।

সর্বশেষ খবর