সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের শাহাদাত বার্ষিকী পালিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামালের ৫০তম শাহাদাতবার্ষিকী  উপলক্ষে আখাউড়া দরুইন গ্রামে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধিতে গতকাল পুষ্পস্তবক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আখাউড়া গঙ্গাসাগর প্রতিরক্ষা অবস্থানের দরুইন গ্রামে নিয়োজিত আলফা কোম্পানির ২ নম্বর প্লাটুনের একজন সেকশন কমান্ডার ছিলেন মোস্তফা কামাল। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ১৭ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য কুমিল্লা-আখাউড়া  রেললাইন ধরে উত্তর দিকে এগোতে থাকে। ১৮ এপ্রিল পরদিন ভোরবেলা পাকিস্তান সেনাবাহিনী আখাউড়া উপজেলা দরুইন গ্রামে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের ওপর মর্টার ও আর্টিলারির গোলাবর্ষণ শুরু করলে মেজর শাফায়াত জামিল ১১ নম্বর প্লাটুনকে দরুইন গ্রামে আগের প্লাটুনের সঙ্গে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন। ১১ নম্বর প্লাটুন নিয়ে হাবিলদার মুনির দরুইনে পৌঁছেন। সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল তার কাছ থেকে গুলি নিয়ে নিজ পরিখায় অবস্থান গ্রহণ করেন।

বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় শত্রুর গোলাবর্ষণ। সে সময় শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোগড়া বাজার ও গঙ্গাসাগরের শত্রু অবস্থান থেকে গুলি বর্ষিত হয়। দুপুর ১২টার দিকে আসে পশ্চিমদিক থেকে সরাসরি আক্রমণ। প্রতিরক্ষার সৈন্যরা আক্রমণের তীব্রতায় বিহ্বল হয়ে পড়ে। কয়েকজন শহীদ হন। মোস্তফা কামাল মরিয়া হয়ে পাল্টা গুলি চালাতে থাকেন। তার পূর্বদিকের সৈন্যরা পেছনে সরে নতুন অবস্থানে সরে যেতে থাকে এবং মোস্তফাকে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু মোস্তফা ছিলেন অবিচল। তাঁর গুলিবর্ষণে পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রায় ২০-২৫ জন হতাহত হয় এবং তাদের অগ্রগতি মন্থর হয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা মরিয়া হয়ে মোস্তফা কামালের অবস্থানের ওপর মেশিনগান এবং মর্টারের গোলাবর্ষণ করতে থাকে। একপর্যায়ে মোস্তফা কামালের এলএমজির গুলি নিঃশেষ হয়ে যায় এবং তিনি মারাত্মক জখম হন। তখন পাকিস্তানি  সৈনিকরা ট্রেঞ্চে এসে তাঁকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে।

সর্বশেষ খবর