মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বোরোর বাম্পার ফলন

মো. জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, রূপগঞ্জ

বোরোর বাম্পার ফলন

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্ধারিত সময়ে কৃষিজমিতে পানি পৌঁছানোয় চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে! এতে খুশি উপজেলার ২ হাজার কৃষক পরিবার। ধানের দাম ভালো পাওয়ায় ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। চলতি বছর উপজেলার ৪৫ হাজার ৬০০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়। নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্প (এনএনআইপি) ও উত্তর রূপগঞ্জ সেচ প্রকল্পের ক্যানেলগুলো সংস্কারের কারণে নির্ধারিত সময়ে পানি পৌঁছানোয় কৃষক জমি আবাদ করতে পেরেছেন। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অধিদফতর। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ এনামুল হক জনান, করোনার সময়ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষির ওপর গুরুত্ব দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এনএনআইপি ক্যানেলগুলো দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা দ্রুত দিয়েছেন। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার দ্রুত কাজ করেছেন। এজন্য চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সেচ খাল ও ক্যানেল সংস্কারের কারণে হাটাবোয় ১ হাজার ৩৫০, মাসুমাবাদে ১ হাজার ৩৮৭, ভুলতায় ৫৬২, মুড়াপাড়ায় ১ হাজার ৩৫০, দড়িকান্দিতে ১ হাজার ১৭০ ও মাছিমপুরে ১ হাজার ৩৫০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। মাছিমপুরের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, ‘এ বছর পানি পাওনে ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগাইছি ভাই। প্রতি বিঘায় ২০ মন করে ধান ওইছে ভাই।’ হাটাবোর কৃষক শফিল আলম ও শামসুল মিয়া বলেন, ‘এ বছর আমরা জমিতে ঠিক সময় পানি পাওনে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভালো হয়েছে।’ মাসুমাবাদ ও ভুলতার কৃষক রিপন বিশ্বাস ও জামাল মিয়া বলেন, ‘বানিয়াদি পাম্প স্টেশন ঠিকমতো চালু রাখায় সরকারপাড়ার মূল খাল দক্ষিণের মেরামতের কারণে ঠিক সময় এলাকায় পানি পৌঁছায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।’ মুড়াপাড়ার কৃষক নবীর হোসেন বলেন, ‘ঠিক সময় পানি পাইছি। কৃষি অফিস সহযোগিতা করণে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ ভালো হয়েছে।’

দড়িকান্দির কৃষক সুবলচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতি বছরের থেকে এ বছর জানুয়ারির শুরুতে সেচ পানি পেয়েছি। এবার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগাইছি। বাম্পার ফলন পেয়েছি।’ হাটাবো টেকপাড়ার কৃষক আবদুর রহমান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঠিক সময় খাল সংস্কার করায় এবার প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়ে ফলন ভালো পেয়েছি।’ মীর কুঠিরছেওয়ের কৃষক ওসমান মিয়া বলেন, ‘আমগো এবার আনন্দ হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। কৃষি আমাদের ভরসা। মাছিমপুর-মীর কুঠিরছেওয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি।

প্রতি বিঘায় ২১ মন ধানের ফলন হয়েছে ভাই। দামও ভালো পাচ্ছি।’ এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার ফাতেহা নুর বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার কাজগুলো ঠিকমতো হওয়ায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা (ডিভিশন-১) বিভাগীয় প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চত্রুবর্তী বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডে সেচ খালগুলো প্রতি বছরের চেয়ে এ বছর সংস্কারের কাজ বেশি হয়েছে। অগ্রণী সেচ প্রকল্পের অধীনে সময়মতো সেচ সুবিধা দেওয়ায় কৃষক বোরো ধানের ভালো ফলন পেয়েছে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর