বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

কবে হবে বেড়িবাঁধ

মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু, বরগুনা

কবে হবে বেড়িবাঁধ

বরগুনা জেলা প্রশাসন, পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বয়হীনতার কারণে নির্মাণ হচ্ছে না বেড়িবাঁধ। ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বলেশ্বর নদী সংলগ্ন কাঁঠালতলি ইউনিয়নের সহস্রাধিক মানুষ ও হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করা হলেও বড় ধরনের সম্পদের ক্ষতির পাশাপাশি প্রাণহানির আশঙ্কাও করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। জানা গেছে, স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি কবে হবে বেড়িবাঁধ। বিভিন্ন সময়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগে বঙ্গোপসাগর লাগোয়া বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বলেশ্বর নদী সংলগ্ন পরিঘাটা পশ্চিম কাঁঠালতলি এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৯/১ পোল্ডারের ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে কাঁঠালতলি ইউনিয়নের ৫ গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার ও ৩০ থেকে ৪০ হাজার হেক্টর ফসলি জমিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। সূত্র জানায়, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ৬০টি পরিবারের জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় ৬০টি পরিবারের ‘জাপানি ব্যারাক’ নামের একটি আবাসন প্রকল্প নির্মাণ করেন। আবাসন প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। সেখানে এখন আর কেউই বসবাস করছে না। যে কোনো সময় আবাসন প্রকল্পটি বিলীন হতে পারে বলেশ্বর নদীর ভাঙনে। সরেজমিন দেখা গেছে, জীর্ণ টিনশেড আবাসনে এখন আর কেউই স্থায়ীভাবে বসবাস করছে না। ৫-৬টি পরিবার গরু-হাঁস-মুরগি পুষছে আর মাছ শিকার করে জীবিকা চালাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জেলা সমন্বয় সভায় পরিত্যক্ত আবাসন সরিয়ে মাটি কেটে বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। জেলা প্রশাসক বিষয়টি সরেজমিন দেখে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করে দেন। এই কমিটি সরেজমিন গিয়ে প্রতিবেদন দেয় পরিত্যক্ত আবাসন সরিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণে মাটি ব্যবহারে সমস্যা নেই। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরও সরিয়ে নেওয়া হয়নি আবাসন প্রকল্পটি। তাই এখনো সম্ভব হয়নি বেড়িবাঁধ নির্মাণ। কাঁঠালতলি ইউনিয়নের পরিঘাটা এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ এলাকা থেকে বঙ্গোপসাগর খুব কাছে। সমুদ্র একটু উত্তাল হলেই তার প্রথম শিকারে পরিণত হই আমরা। কয়েকজন মানুষের জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। এর ফলে গোটা ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগামী বর্ষার আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা না হলে এখানকার মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৩৯/১-এ পোল্ডারের ভেঙে যাওয়া  ৪১০ মিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি কাজটি বাস্তবায়নের জন্য কার্যাদেশ পায় পটুয়াখালী জেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিজানুর আলম এন্টারপ্রাইজ। তারা কাজ শুরু করতে গেলে স্থানীয় জমির মালিকরা তাদের কাজে বাধা প্রদান করেন। স্থানীয়ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জমি অধিগ্রহণ না করায় বেড়িবাঁধ সংশ্লিষ্ট জমির মালিকরা তাদের মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি কাটতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। একাধিকবার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার উদ্যোগ নিলেও ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের বাধার কারণে কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর