সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

লকডাউনে বেকার ১২ হাজার পরিবহন শ্রমিক

পরিবার পরিজন নিয়ে শ্রমিকদের মানবেতন জীবনযাপন

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

লকডাউনে বেকার ১২ হাজার পরিবহন শ্রমিক

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারা দেশের ন্যায় নওগাঁয়ও চলমান কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এই লকডাউনে সবকিছুই স্বাভাবিক থাকলেও নওগাঁর অভ্যন্তরীণ সব রুটের বাস বন্ধ রয়েছে। এতে এ পেশার সঙ্গে জড়িত প্রায় ১২ হাজার বাস, মিনিবাস ও হিউম্যান হলার শ্রমিকদের দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে। সহায়তা মিলছে না কোথাও থেকে। কঠোর লকডাউনের সময় যত গড়াচ্ছে, মানুষের ঘরের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতাও তত বাড়ছে। জরুরি প্রয়োজন না থাকলেও কেউ কেউ নানা অজুহাতে বের হচ্ছেন। কোথাও কোথাও সড়কের চিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে চলাচলে এমন কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। শহরের সবখানে সিএনজি, অটোচার্জার ভ্যান, অটোরিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িসহ অন্যসব যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু কঠোর বিধিনিষেধের কারণে সব গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাসচালক, হেলপার ও সুপারভাইজাররা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনানিপাত করছেন। এখন পর্যন্ত কর্মহীন হয়ে পড়া এই শ্রমিকদের কপালে জোটেনি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা। সরকার, পরিবহন মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন কেউই এই পরিবহন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায়নি। জমানো টাকা যা ছিল, তা দিয়ে দিন পার করছেন। আগামী দিনগুলো কীভাবে পার করবেন, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না। এসব বেকার হয়ে পড়া হাজার হাজার শ্রমিক মালিক সমিতি কিংবা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পাচ্ছেন না কোনো সহায়তা। তাই সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবি কর্মহীন হাজার হাজার গণপরিহন শ্রমিকের। সরেজমিন শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায়, বসে-শুয়ে অলস সময় পার করছেন বাস শ্রমিকরা। অনেকেই বাসস্ট্যান্ডে চুলা বানিয়ে দুবেলা দুমুঠো খাবার চেষ্টা করছেন। বাসচালক ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের মতো এবারের চলা কঠোর লকডাউনে এখন পর্যন্ত সাহায্যের হাত বাড়ায়নি কেউ। তারা বলছেন, কেউ আমাদের খবর নেয় না। জেলার প্রায় ১২ হাজার বাস-মিনিবাস শ্রমিক এখন অভাব-অনটনের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। বাসের চাকা ঘুরলে আমাদের পকেটে টাকা আসে, আমাদের আয় হয়। লকডাউনে সড়কে বাসও চলে না, আমাদের রোজগারও হয় না। সুপারভাইজার আবদুল জলিল, চালক হাসান আলীসহ অনেকেই বলেন, সরকারি নির্দেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে বাস চলাচল বন্ধ। সংসার চালানো নিয়ে খুব অশান্তির মধ্যে জীবনযাপন করছি। গত বছরও যখন লকডাউন চলছিল, তখন সরকার সহযোগিতা করার কথা জানায়। কিন্তু আমাদের সবার ভাগ্যে সেই সহায়তা জোটেনি। শেখ হাসিনা সরকারের কাছে আমাদের করজোরে অনুরোধ, আমাদের বাঁচান। আমাদের জন্য কিছু অনুদান দিয়ে রক্ষা করেন। আমরা না পারি রিকশা-ভ্যান চালাতে, না পারি কারও কাছে হাত পাততে। নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি এহসান রেজা রেনজা বলেন, আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব নয়।

সর্বশেষ খবর