শনিবার, ১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সংকটে ৩৫০ ক্যামেরাম্যান সরকারি সহায়তা দাবি

‘২০ বছরে এমন খারাপ পরিস্থিতিতে পড়িনি’

নীলফামারী প্রতিনিধি

মোহাম্মদ নাদিম। থাকেন সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকায়। পাঁচ সদস্যের সংসার তার। ভিডিও ধারণ করে অর্জিত অর্থ দিয়ে চলে সংসার। করোনার প্রাদুর্ভাবে গত এক বছর আর্থিক সংকট বিপর্যস্ত করেছে তাকে। চলতে হচ্ছে ধারদেনা করে। চলমান লকডাউন আরও হতাশায় ফেলেছে তাকে। নাদিম বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমি এ কাজ করি। এর আগে কখনো এমন সংকটে পড়িনি। একটা বছর ভিডিও’র কাজ হয়নি বলেই চলে। দীর্ঘ এ সময় বেকার বসে থাকতে হয়েছে। করোনাকাল সীমাহীন কষ্টে কাটছে। কাউকে বলাও যায়না, সহ্য করাও যায়না। এই হলো আমাদের পরিণতি।’ সৈয়দপুর শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের সুজন ভিডিও’র স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সুজন বলেন, আমার এখানে চারজন কাজ করেন। তারা প্রত্যেকে ভিডিও ধারণ করে এনে দেন। দিনে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে পেতেন তারা। করোনা তাদের উপার্জন কেড়ে নিয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায় ধস নামায় আমিও চলতে পারছি না। অভাব-অনটনে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। নতুন করে লকডাউনে মাথায় হাত পড়েছে আমাদের সবার। তিনি বলেন, আমার ১৭ বছরের ব্যবসায়িক জীবনে করোনার বছর ইতিহাস। আমরা কারও কাছে চাইতেও পারি না, কেউ আমাদের দেয়ও না। সুজন বলেন, কেউ ভাবেনি আমাদের কথা। সরকার থেকেও কিছু পাইনি। তাদের মতো একই অবস্থা নীলফামারীর ৩৫০ জন পেশাদার ক্যামেরাম্যানের। এ পেশায় নিয়োজিতরা জানান, করোনার কারণে সব ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় হয়নি বিয়ে, খাতনা, আকিকা, জন্মদিন, বউভাতসহ  রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এমনকি ক্রীড়ানুষ্ঠানও। তাদের ভাষ্য, গত বছর মার্চে লকডাউন শুরু হওয়ার পর ভাটা পড়া শুরু হয় তাদের কাজে। লকডাউন উঠে গেলেও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শে নীলফামারীতে হয়নি তেমন কোনো অনুষ্ঠান। ফলে ভিডিও বা চিত্র ধারণের সঙ্গে জড়িতদের এ সময়ে কদর নেই। মোহাম্মদ ভুলু নামে একজন বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবে সরকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রণোদনা দিয়েছে। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা মানুষ পেয়েছে কিন্তু আমরা কিছুই পাইনি।

জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন, যেন আমাদের বিষয়টি একটু দ্যাখেন। রমজান ফটোগ্রাফির স্বত্বাধিকারী রমজান আলী বলেন, গোটা জেলায় সাড়ে ৩০০ ব্যক্তি রয়েছেন যারা প্রত্যক্ষভাবে এই পেশায় জড়িত। তারা এ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আমরা শেষ হয়ে গেছি। অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ডাকা হয় না আমাদের। ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে না। আমরা চলব কি করে।

আমাদের পরিবার পরিজন আছে। এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবে আমাদের।

সর্বশেষ খবর