সোমবার, ৩ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সেচ সংকটে বোরো ধান

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

সেচ সংকটে বোরো ধান

প্রচন্ড খরায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে জেলার ভোলাহাট উপজেলার বিলভাতিয়ায় সেচ সংকটে পড়েছে প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান। ফলে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলাহাটের বিলভাতিয়ায় ৯ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন আবদুর রহিম। নিজস্ব শ্যালো মেশিনে ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে গত বছর থেকে বোরো ধানের চাষ করছেন তিনি। কিন্তু ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ দিতে না পারায় ফাটল ধরেছে তার জমিতে। অবশেষে তার শ্যালো মেশিনটি গর্ত করে ১০/১২ ফুট নিচে নামিয়ে পানি উঠানোর চেষ্টা করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন আবদুর রহিম। তিনি বলেন, গত বছর ৯ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। সে বছরও পানির সমস্যা হয়েছিল। তবে বৃষ্টির পানিতে ধান বাঁচাতে পেরেছিলেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত বৃষ্টির পানি নেই। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর গত বছরের চেয়ে নিচে নেমে যাওয়ায় শ্যালো মেশিনে পানি না ওঠায় সমতল থেকে ১০/১২ ফুট মাটির নিচে দিয়েও পানি উঠছে না। শেষ পর্যন্ত আম গাছে বিষ দেওয়ার স্প্রে মেশিনের সাহায্যে ড্রামে পানি নিয়ে এসে ধানে স্প্রে করছেন তিনি। অপর বোরো চাষি তৈমুর বলেন, পানি নিচে নেমে যাওয়ায় শ্যালো মেশিনে পাতাল থেকে পানি ওঠে না। যার কারণে হাজার হাজার বিঘা জমির ধান মরে গেছে। মাঠের সব শ্যালো মেশিন বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ মরা ধান কেটে গরু মহিষকে খাওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে। অন্য কৃষক মইনুর রহমান জানান, শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উঠছে না। ধান মরে গেছে। তিনি বলেন, আমি ৩০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। পানি না ওঠায় সব ধান মরে গেছে। এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে শ্রমিক, সার-বিষ, হালচাষসহ খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। শ্যালো মেশিনে ভূগর্ভস্থ পানির সমস্যা হলেও বৈদ্যুতিক সংযোগের মাধ্যমে সেমিডিপ স্থাপন করলে এসব জমিতে পানি সংকট থাকবে না। এদিকে কৃষক তোফাজ্জুল বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ পেলে কৃষক কোটি কোটি টাকার ধান ঘরে তুলতে পারবে। কিন্তু একটি পোল নিতে কৃষককে ৫০ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। গরিব কৃষকের দ্বারা এত টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে সেমিডিপ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, শ্যালো মেশিনের পরিবর্তে বিদ্যুৎচালিত অগভীর নলকূপ বসালে ধানের সমস্যা হবে না। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে অনেক জায়গায় কৃষক হতাশ হচ্ছেন। তিনি বলেন, বড় বিলভাতিয়া খনন করলে পানি সংকট হবে না। সংরক্ষিত পানি থেকে কৃষিজমি চাষ করে অল্প ব্যয়ে বেশি ফলন পাবেন কৃষক। তিনি বলেন, ভোলাহাটে মোট ৩০০ ডিজেলচালিত মেশিন রয়েছে। বৃষ্টি হলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা ওপরে উঠবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর