বুধবার, ৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

রসুনের বাম্পার ফলে কৃষকের মুখে হাসি

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

রসুনের বাম্পার ফলে কৃষকের মুখে হাসি

দিনাজপুরে সাদা সোনাখ্যাত রসুনের বাম্পার ফলনে হাসিতে ভাসছে কৃষক। এ রসুন বাজারে প্রথম ওঠার পর করোনার প্রভাবে দাম নিয়ে চিন্তিত থাকলেও এখন ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক খুশি। বিগত বছরে রসুনের ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এ মৌসুমেও রসুন চাষে ঝুঁকেছেন। এছাড়া বাম্পার ফলনও হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রসুনই কৃষকের মুখে হাসি এনে দিয়েছে। আর রসুন বিক্রির উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাট দিনাজপুরের খানসামার কাচিনিয়ায়। কয়েক দশক ধরে বসে এই রসুনের হাট। দিন দিন বাড়ছে এর পরিধি। উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, লালমনিরহাট, গাইবন্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী ও সিরাজগঞ্জ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার রসুন ব্যবসায়ীরা কাচিনিয়া হাটে রসুন কিনতে আসে। খানসামার রসুনের মান ভালো ও দাম কম হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা রসুন কিনতে আসে। কাচিনিয়া রসুনের হাটটি সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও মঙ্গলবার ভোর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। এই হাটটি পরিণত হয় যেন রসুনের মেলায়। উত্তরাঞ্চলের বড় হাট কাচিনিয়া ছাড়াও পাকেরহাট প্রতি শনিবার, রবিবার এবং ভুল্লার হাট রসুনের বাজার বসে প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার। প্রতিদিন হাটে ৮-১০টি ট্রাকে করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারিরা রসুন ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। রসুনের আবাদ এলাকার কৃষকদের ভাগ্য বদলিয়েছে। এলাকার সব টিনের আধা-পাকা ঘর রসুন চাষিদের। কৃষকরা রসুন রাখার জন্য ঘরই আলাদা করে বানিয়েছেন। অনেক অভাবী সংসারেও এনে দিয়েছে স্বচ্ছলতা। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রসুন উত্তোলন আর বেচাকেনা শুরু হয়েছে।  রসুন চাষের অন্যতম স্থানগুলো হলো, খানসামার ভাবকী ইউপির গারপাড়া, রামনগর, গুলিয়াড়া, কাচিনিয়া, দেউলগাঁও এবং মারগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর পরিমাণে রসুন চাষ হয়। এবারেও রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে।

গোয়ালডিহি গ্রামের আমিনুল ইসলাম ও নেছারুল ইসলাম, গারপাড়া গ্রামের আবুল কালাম বলেন, এ বছর বীজ রসুনের বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় প্রতি বিঘাতে বীজ, সার, বপন, হাল চাষ, নিড়ানি ও অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা। ফলনও ভালো হওয়ায় প্রতি বিঘাতে রসুন উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৬০-৭০ মণ। প্রতি বিঘার উৎপাদিত রসুন যার বিক্রি হয় প্রায় ১ লাখ টাকায়। একরে ৬০ হাজার টাকা খরচ হলেও কৃষকের লাভ হয়েছে ৩০-৩৬ হাজার টাকা।  কাচিনীয়া গ্রামের রসুন চাষি রশিদুল ইসলাম বলেন, ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে রসুনের দাম কম থাকায় শুকনা অবস্থায় প্রতি কেজি ৪০ টাকা করে ১৬০০ টাকা প্রতি মণ রসুন বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানায় প্রতি বছর রসুনের এই মৌসুমে তারা রসুন  কেনার জন্য এ কাচিনিয়া বাজারে আসে। তারা শুধু উত্তরাঞ্চল নয় দেশের কোথাও রসুনের এত বড় বাজার দেখেননি। রসুনের মান ভালো ও দাম কম হওয়ায় তারা প্রতি বছর  রসুন কিনতে এখানে আসে।

সর্বশেষ খবর