প্রিয় এলাকাবাসী। আপনারা কী লিচু কিনতে চান? তাহলে চলে আসুন আমাদের প্রচার গাড়ির কাছে। খেতে সুস্বাদু। সুমিষ্ট ফল। বোম্বাই লিচু। একবার খেলে আবার খেতে ইচ্ছে করবে। শ’ মাত্র ৩০০ টাকা। এমন প্রচারণায় কোনো দোকান বা ভ্যান-রিকশায় লাগানো মাইকে নয়। ব্যতিক্রমী এই প্রচার রেকর্ড বাজতে শোনা যায় এক্িট মাইক্রোবাসে। এলাকার মানুষ এর আগে এভাবে মাইক্রোবাসে করে লিচু বা অন্য কোনো ফল বিক্রি হতে দেখেননি। এমন রসালো প্রচারণা শুনে কৌতূহলী মানুষ একবার হলেও ভ্রাম্যমাণ গাড়ির কাছে গিয়ে দরদাম করছেন লিচু কেনার জন্য। ঈদের পর থেকে বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইক্রোবাসে করে বিক্রি হচ্ছে যশোরের বোম্বাই লিচু। এবার দক্ষিণাঞ্চলে অনাবৃষ্টি আর প্রচণ্ড খরায় সব ধরনের ফলের ফলন খুবই কম। এলাকায় লিচুতো অনেকটা দুর্লভ বস্তুতে পরিণত হয়েছে। এসব কারণে দাম বেশি হলেও মাইক্রোবাস থেকে লিচু কিনছেনও অনেকে। সুদূর যশোর থেকে এসে এই লিচু বিক্রি করছেন শাহিন শেখ নামের এক যুবক। তিনি নিজে এই গাড়ি বা লিচুর মালিক নন। যশোর নিউমার্কেট এলাকার ফল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের বিক্রয় প্রতিনিধি তিনি। গতকাল বিকালে শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারে মাইক্রোবাসে করে লিচু বিক্রয়কালে জানতে চাইলে শাহিন শেখ বলেন, এর আগে বাগেরহাটের অন্যান্য উপজেলায় মাইক্রোবাসে করে লিচু বিক্রি করলেও শরণখোলায় এই প্রথমবার তারা এসেছেন। প্রতিদিন আট হাজার থেকে দশ হাজার টাকার লিচু বিক্রি হচ্ছে। ওই লিচু বিক্রেতা জানান, বোম্বাই লিচু খেতে খুবই সুস্বাদু। সাইজও বড় হয়। কিন্তু এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় লিচু বড় হয়নি। পরিপক্ব হওয়ার আগেই বেশিরভাগ লিচু গাছ থেকে ঝরে গেছে। এ কারণে দাম একটু বেশি। তার মালিক সাইফুল ইসলাম এ বছর ২০টি লিচু বাগান কিনেছেন। আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লোকসান হবে মালিকের। লিচু ক্রেতা আনিসুর রহমান বলেন, আমি ৬০ টাকায় এক কুড়ি (২০টি) লিচু কিনেছি। গ্রামাঞ্চলে এবার লিচু নেই বললেই চলে। যার ফলে, যশোরের এই লিচু চড়া দামে কিনে খেতে হচ্ছে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে আমাদের এলাকায় লিচুসহ অন্যান্য ফলের ফলন একেবারেই কম। দু-একটি গাছে লিচু হলেও তা সাইজে খুবই ছোট। শরণখোলায় মাইক্রোবাসে করে লিচু বিক্রি করতে এর আগে দেখা যায়নি। এটি ব্যতিক্রম হওয়ায় মানুষের কেনার ও দেখার আগ্রহ দুটোই বেশি।
