বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে ধান ভাঙার মেশিন

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে ধান ভাঙার মেশিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলতি মৌসুমের বোরো ধান সর্বত্র কাটা প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। স্থানীয় কৃষকরা এখন নতুন ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজ করছেন। সে সঙ্গে  শুকানো ধান  ভাঙতে এখন ব্যস্ত গৃহস্থ ও  কৃষকরা।  এদিকে নতুন ধানকে কেন্দ্র করে প্রযুক্তির কল্যাণে ধান ভাঙার মেশিন চলে যাচ্ছে মানুষের বাড়ি বাড়ি। গ্রামাঞ্চলে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহারে তৈরি করা ধান ভাঙার মেশিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। আধুনিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় ধান ভাঙানোর জন্য গৃহস্থদের হাট-বাজার কিংবা মেইল বাড়িতে এখন আর যেতে হচ্ছে না। ঘরে বসেই পাচ্ছে ধান ভাঙার সুবিধা। এতে করে কৃষক ও গৃহস্থদের সময় ও শারীরিক কষ্ট থেকে রক্ষা পাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি ধান ভাঙতে লোডশেডিং কিংবা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়তে হচ্ছে গৃহস্থদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ধাতুর পহেলা, মোগড়া, কর্নেলবাজার, মনিয়ন্দসহ বিভিন্ন এলাকায় যুবকরা ধান ভাঙার মেশিন তৈরি কওে মৌসুমী ধান ভাঙার কাজ করছেন। গ্রামের বেকার যুবকরা একটি পাওয়ার ট্রিলার মেশিনের সঙ্গে ১টি হলার যোগ করে নিজেদের উদ্যোগে ধান ভাঙার মেশিন তৈরি করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান ভাঙার কাজ করছেন। এক সময় মানুষ তাদের উৎপাদিত শুকনো ধান ভাঙতে অনেক কষ্ট করত। ধান ভাঙার মেইল বাড়িতে গিয়ে ধান ভাঙতে আসা যাওয়াসহ গৃহস্থদের অনেক পরিশ্রম হয়। এখন ধান কাটা মাড়াই ও শুকনোর পর চাউল করার জন্য ঘরের পুরুষের ওপর নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে না। যুবকরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে ধান ভাঙার কাজ করায় গৃহবধূরা যেন মহাখুশি। এ পেশায় নিয়োজিত উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের ধাতুর পহেলা গ্রামের মো. হাফেজ উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০-৪০ মন ধান ভাঙানো হয়। বোরো ধান কাটা ও মাড়াই কাজ শেষে পর্যায়ে চলছে। গৃহস্থরা এখন ধান শুকাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠছেন। সে সঙ্গে এখন চলছে ধান ভাঙার কাজও। যাদের ধান ভাঙার প্রয়োজন তারা যোগাযোগ করলে বাড়িতে গিয়ে ভাঙার কাজ করা হয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান ভাঙার প্রচুর চাহিদা আছে। তাছাড়া ধান ভাঙার মেশিনের শব্দশুনে আশপাশের লোকজন আসেন বলে জানায়। তিনি আরও বলেন, প্রতি মন ধান ৫০ টাকায় ভাঙানো হয়। খরচ বাদে দৈনিক ১ হাজার টাকার উপর আয় হচ্ছে বলে জানায়। মো. ফরিদ মিয়া বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে বেকার ছিলাম। কাজকার্ম ছিল না। তাই একটি ধান ভাঙার মেশিন তৈরি করা হয়। এ মৌসুমে ধান ভাঙার কাজ ভালই হচ্ছে বলে জানায়। সেবা গ্রহণকারী গৃহিণী ফামেতা বেগম বলেন, এ মেশিনের মাধ্যমে বাড়িতে ধান ভাঙতে আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। আগে বস্তায় করে পরিবহনের মাধ্যমে মেইল বাড়িতে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হত। মো. মোবারক হোসেন বলেন, এ মেশিনে ধান ভাঙতে খরচ সামান্য বেশি হলেও কোন প্রকার গৃহস্থের কষ্ট নেই। পরিশ্রম ছাড়া ঘরে বসেই ধান ভাঙতে পেরে খুবই খুশি। কারণ মেইল বাড়িতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে ধান ভাঙতে হয়। এখন অনেক সুবিধা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর